বাংলা পত্রিকা / সাময়িকী ও সম্পাদক

পৃথিবীর প্রথম সংবাদপত্র ১৫৬০ সালে জার্মান থেকে প্রকাশিত হয়। ১৭০২ সালে ইংল্যান্ড থেকে প্রকাশিত হয় বিশ্বের প্রথম দৈনিক পত্রিকা । ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ সরকার ১৭৯৫ সালে পত্র-পত্রিকায় প্রথম সেন্সর প্রথা চালু করে । ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র জেমস্ অগাস্টাস হিকি সম্পাদিত ‘বেঙ্গল গেজেট' (১৭৮০)। এটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় । বাংলা ভাষার প্রথম সাময়িকপত্র জন ক্লার্ক মার্শম্যান সম্পাদিত ‘দিগদর্শন' (১৮১৮)। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র জন ক্লার্ক মার্শম্যান সম্পাদিত ‘সমাচার দর্পণ' (১৮১৮)। এটি সাপ্তাহিক হিসেবে প্রকাশিত হয়। বাঙালি কর্তৃক প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য সম্পাদিত ‘বাঙ্গাল গেজেট' (১৮১৮)। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সম্পাদিত ‘সংবাদ প্রভাকর'। সাপ্তাহিক হিসেবে ১৮৩১ সালে এবং দৈনিক হিসেবে ১৮৩৯ সালে প্রকাশিত হয়। মুসলমান কর্তৃক প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা শেখ আলিমুল্লাহ সম্পাদিত ‘সমাচার সভারাজেন্দ্র' (১৮৩১)। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র গুরুচরণ রায় সম্পাদিত ‘রংপুর বার্তাবহ' (১৮৪৭)। ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার সম্পাদিত ‘ঢাকা প্রকাশ' (১৮৬১)।

বাংলা পত্রিকা / সাময়িকী ও সম্পাদক

সাময়িকী / সংবাদপত্র ও প্রকাশকাল সম্পাদক পত্রিকা সম্পর্কিত তথ্য
বেঙ্গল গেজেট (১৭৮০) জেমস অগাস্টাস হিকি ভারতবর্ষের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র (ইংরেজিতে)।
দিগদর্শন (১৮১৮) জন ক্লার্ক মার্শম্যান বাংলা ভাষার প্রথম সাময়িকপত্র।
সমাচার দর্পণ (১৮১৮) জন ক্লার্ক মার্শম্যান বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র (সাপ্তাহিক)।
বাঙ্গাল গেজেট (১৮১৮) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য বাঙালি কর্তৃক প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র।
সম্বাদ কৌমুদী (১৮২১) রাজা রামমোহন রায় সামাজিক কুসংস্কার অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রকাশিত হত।
ব্রাহ্মণসেবধি (১৮২১)
পশ্বাবলী (১৮২২) বেভারেন্ড লঙ -
সমাচার চন্দ্রিকা (১৮২২) ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় -
বঙ্গদূত (১৮২৯) নীলমণি হালদার -
সংবাদ প্রভাকর (সাপ্তাহিক)-(১৮৩১) ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত -
সংবাদ প্রভাকর (দৈনিক)-(১৮৩৯) বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক সংবাদপত্র।
সমাচার সভারাজেন্দ্র(১৮৩১) শেখ আলিমুল্লাহ মুসলমান কর্তৃক প্রকাশিত প্রথম পত্রিকা।
জ্ঞানান্বেষণ (১৮৩১) দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায় ‘ইয়ংবেঙ্গল' গোষ্ঠীর মুখপত্র।
তত্ত্ববোধিনী (১৮৪৩) অক্ষয়কুমার দত্ত তত্ত্ববোধিনী সভার মুখপত্র।
রংপুর বার্তাবহ (১৮৪৭) গুরুচরণ রায় বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র।
ঢাকা প্রকাশ (১৮৬১) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র।
গ্রামবার্তা প্রকাশিকা (১৮৬৩) কাঙাল হরিনাথ কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র।
বঙ্গদর্শন (১৮৭২) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা গদ্যের বিকাশে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
ভারতী (১৮৭৭) দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর -
সুধাকর (১৮৮৯) শেখ আব্দুর রহিম মুসলমানদের মহিমা, তত্ত্ব, জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয় এতে আলোচিত হতো।
মিহির (১৮৯২)
হাফেজ (১৮৯৭)
কোহিনুর (১৮৯৮) মো: ইয়াকুব আলী কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র।
সবুজপত্র (১৯১৪) প্রমথ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতি প্রচলনে অবদান রাখে।
সওগাত (মাসিক)-(১৯১৮) মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন -
সওগাত (সাপ্তাহিক)-(১৯২৮)
মোসলেম ভারত (১৯২০) মোজাম্মেল হক কাজী নজরুলের কাব্য খ্যাতিতে এটি অবদান রাখে।
আঙুর (১৯২০) ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কিশোর পত্রিকা
ধূমকেতু (১৯২২) কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ পত্রিকায় অভিনন্দন বাণী পাঠিয়েছেন।
লাঙ্গল (১৯২৫) কাজী নজরুল ইসলাম -
নবযুগ (১৯৪১) কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২০ সালে মুজাফফর আহমদ সহযোগে প্রথম প্রকাশিত।
কল্লোল (১৯২৩) দীনেশরঞ্জন দাশ এ পত্রিকাকে ঘিরে একটি স্বতন্ত্র সাহিত্যিক বলয় তৈরি হয়েছিল।
কালী ও কলম (১৯২৬) - ঢাকায় প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা।
মাসিক মোহাম্মদী (১৯২৭) মো: আকরম খাঁ কলকাতা থেকে প্রকাশিত।
শিখা (১৯২৭) আবুল হোসেন ‘বুদ্ধির মুক্তি' আন্দোলনের মুখপত্র রূপে প্রকাশিত।পত্রিকার প্রতি সংখ্যায় লেখা থাকত-“জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ,বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট,মুক্তি সেখানে অসম্ভব”।
পূর্বাশা (১৯৩২) সঞ্জয় ভট্টাচার্য -
কবিতা (১৯৩৫) বুদ্ধদেব বসু ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা
দৈনিক আজাদ (১৯৩৬) মো: আকরম খাঁ কলকাতা থেকে প্রকাশিত
চতুরঙ্গ (১৯৩৯) হুমায়ুন কবির -
ক্রান্তি (১৯৪০) রণেশ দাশগুপ্ত ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
বেগম (সাপ্তাহিক)-(১৯৪৭) সুফিয়া কামাল, নুরজাহান বেগম মহিলা সম্পাদিত প্রথম পত্রিকা।
সমকাল (১৯৫৭) সিকান্দার আবু জাফর তৎকালীন সময়ের ঢাকার প্রভাবশালী পত্রিকা।
কণ্ঠস্বর (১৯৬৫) আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ -
কালবেলা ( ১৯৬৫) জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত -
স্বদেশ (১৯৬৯) আহমদ ছফা -
শিলালিপি (১৯৬৯) সেলিনা পারভীন -
শিল্পকলা (১৯৭০) আবদুল মান্নান সৈয়দ -
লোকায়ত (১৯৯০) - ১৯৯০ সালে হুগলী জেলার শ্রীরামপুর স্টেশনের ডাউন প্লাটফর্মের হাতে লেখা দেয়াল পত্রিকা ‘লোকায়ত’র শুরু । ১৯৯২ সালে মুদ্রিত আকারে আত্নপ্রকাশ।
নারীশক্তি ডা. লুৎফর রহমান নারী সমাজের প্রগতির লক্ষ্যে প্রকাশিত।
ইত্তেফাক তফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া) -
উত্তরাধিকার (প্রথমে ত্রৈমাসিক, বর্তমানে মাসিক) বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত।
ধান শালিকের দেশ (ষাণ্মাসিক) বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত শিশু পত্রিকা।
সাহিত্য পত্রিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলা বিভাগ)
ভাষা সাহিত্যপত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলা বিভাগ)
সাহিত্যিকী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (বাংলা বিভাগ)

‘বেঙ্গল গেজেট' পত্রিকার পরিচয়

১৭৮০ সালে ২৯ জানুয়ারি কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় । ভারতের প্রথম মুদ্রিত সংবাদপত্র জেমস অগাস্টাস হিকি সম্পাদিত ‘বেঙ্গল গেজেট'। পত্রিকাটিতে মূলত বিজ্ঞাপন, বিদেশী ইংরেজি পত্রিকা থেকে উদ্ধৃতি, সংবাদদাতাদের বিবরণধর্মী লেখা ছাপা হতো। প্রকাশের প্রথম মাস দশেক কোন রাজনৈতিক বিবাদপূর্ণ লেখা প্রকাশিত হয়নি। পরবর্তীতে প্রশাসনের বিপক্ষে কিছু লেখা বের হলে ১৭৮০ সালের ১৪ নভেম্বর ফোর্ট উইলিয়াম থেকে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ডাকঘরের মাধ্যমে পত্রিকা বন্ধ করা হয়। পরে হিকি মামলায় জড়িয়ে পড়ে এবং ১৭৮২ সালে তাঁর ছাপাখানা আটক ও বিক্রি করে দেয়া হলে ভারতবর্ষের প্রথম সংবাদপত্রের অপমৃত্যু ঘটে।

‘দিকদর্শন' পত্রিকার পরিচয়

১৮১৮ সালের এপ্রিল মাসে বাংলা মাসিকপত্র হিসেবে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মিশনারিদের পক্ষ থেকে জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনায় ‘দিকদর্শন' প্রকাশিত হয়। সংবাদ অপেক্ষা ধর্মীয় নীতিকথা ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তথ্য পরিবেশনই বেশি প্রাধান্য পেত। ২৬টি সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার পর এ পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। নীতি ও ধর্ম শিক্ষা প্রচার করায় তৎকালীন সরকার এ পত্রিকার উপর সদয় ছিল। সে অর্থে এ পত্রিকা সংবাদপত্র হিসেবে নয়; নীতি- ধর্ম-তত্ত্বমূলক মাসিক সাময়িকপত্র হিসেবে পরিচিত ছিল।

‘সমাচার দর্পণ' পত্রিকার পরিচয়

১৮১৮ সালের মে মাসে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মিশনারির জন ক্লার্ক মার্শম্যানের সম্পাদনায় ‘সমাচার দর্পণ' নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। মার্শম্যান বিশেষভাবে সক্রিয় ছিলেন না, এতে বাঙালি হিন্দু পণ্ডিতেরা লিখতেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন জয়গোপাল তর্কালঙ্কার। সংবাদই ছিল এ পত্রিকার প্রাণ, তবে ধর্ম বা তত্ত্ব আলোচনাও থাকত। এ পত্রিকা কোনো ধর্মীয় বিতর্কে না গিয়ে খ্রিস্টান মতবাদের প্রতি পক্ষপাত পোষণ করতো। এ পত্রিকার লেখার ভাষায় সারল্য, তথ্যবোধ ও মাত্রাজ্ঞান লক্ষ্যযোগ্য বিদ্যমান ছিল। এটি ১৮৪০ সালে বন্ধ হয়ে যায়।

‘সংবাদ প্রভাকর' পত্রিকার পরিচয়

বাংলা গদ্য সাহিত্যকে শিশু থেকে যৌবনপ্রাপ্ত করার বিশেষ সহযোগী হিসেবে ‘সংবাদ প্রভাকর' পত্রিকার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এটি ১৮৩১ সালে প্রথমে সাপ্তাহিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ১৮৩৯ সালে দৈনিকরূপে প্রকাশিত হয়। দীনবন্ধু মিত্র, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ মূলত এ পত্রিকার মাধ্যমে শুরু হয়। এছাড়াও বহু খ্যাতনামা ব্যক্তি (জয়গোপাল তর্কালঙ্কার, প্রসন্নকুমার ঠাকুর) এ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। ‘সংবাদ প্রভাকর’ বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক।

‘কল্লোল’ যুগ সম্পর্কে ধারণা

১৯২৩ সালে আধুনিক লেখকদের সাহিত্যিক মুখপত্র হিসেবে কলকাতা থেকে মাসিক 'কল্লোল' প্রকাশিত হয়। দীনেশরঞ্জন দাশ ছিলেন এর সম্পাদক। এটি রবীন্দ্র-রোমান্টিক সাহিত্যের বিরুদ্ধধারা হিসেবে আধুনিক সাহিত্যের সূচনা হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ পত্রিকার লেখকগণ বয়সে তরুণ, সৃষ্টিতে কূলপ্লাবী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চেতনা, ইউরোপীয় সাহিত্যের প্রভাব এ তরুণ লেখকদের লেখনিতে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র, বুদ্ধদেব বসু, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ ছিলেন এ পত্রিকার নিয়মিত লেখক।

‘সবুজপত্র' পত্রিকার পরিচয়

প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত 'সবুজপত্র' বাংলা সাময়িক পত্রের ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ১৯১৪ সালে এর প্রথম প্রকাশ ঘটে। বাংলা গদ্যরীতির বিকাশে এই পত্রিকার গুরুত্ব অপরসীম। সাধু গদ্যরীতির পরিবর্তে চলিত গদ্যরীতি ব্যবহার ও প্রতিষ্ঠায় এটির অবদান তাৎপর্যপূর্ণ। রবীন্দ্রনাথ নিজেও এই পত্রিকায় লেখার সুবাদে চলিত গদ্যরীতির স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করেন এবং পরে তা তিনি চর্চা করেন। প্রমথ চৌধুরী ‘বীরবলী রীতি' নামে যে মৌখিক ভাষারীতি সাহিত্যে প্রচলন করে যুগান্তর এনেছিলেন তার প্রচারের মাধ্যম ছিল এই সবুজপত্র। সাহিত্যজগতে এ পত্রিকা ‘সবুজপত্র গোষ্ঠী’ তৈরি করতে সক্ষম হয়।

‘সমকাল' পত্রিকার পরিচয়

১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত ‘সমকাল' সমকালীন সময়ের প্রভাবশালী পত্রিকা। তৎকালীন পাকিস্তানে, বর্তমান বাংলাদেশের আধুনিক সাহিত্যের বীজতলা নির্মাণে ‘সমকাল' পত্রিকার ভূমিকা অপরিসীম। ষাটের দশকের সকল সাহিত্যিক এ পত্রিকায় লিখতেন। এ পত্রিকার হাত ধরেই অনেক সাহিত্যিক খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেছেন বা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।

নবীনতর পূর্বতন