ডেটা কমিউনিকেশন কি ? ডেটা কমিউনিকেশন সিস্টেমের আদ্যোপান্ত

ডেটা শব্দের বাংলা অর্থ তথ্য এবং কমিউনিকেশন শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে যোগাযোগ । শব্দগত অর্থ বিশ্লেষণ করলে ডেটা বা তথ্যের আদান প্রদানকেই ডেটা কমিউনিকেশন বলা যায় । কম্পিউটার বা অন্য কোন যন্ত্রের মাধ্যমে ডেটাকে একস্থান হতে অন্য স্থানে বা এক ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে স্থানান্তর প্রক্রিয়াই হচ্ছে ডেটা কমিউনিকেশন। ১৯৬০ সালে সর্বপ্রথম একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটার ও দূরবর্তী টার্মিনালের মধ্যে উপাত্ত আদান-প্রদান প্রক্রিয়ার প্রচলন শুরু হয়। ডেটা কমিউনিকেশনের মৌলিক উপাদান ৫টি। যথা- ম্যাসেজ (Message), প্রেরক (Sender), গ্রাহক (Receiver), ট্রান্সমিশন মাধ্যম (Transmission Medium) এবং প্রোটোকল।

 ডেটা কমিউনিকেশন
ডেটা কমিউনিকেশন

কমিউনিকেশন সিস্টেম

দুইটি পক্ষের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য যে মাধ্যম ব্যবহার করে তাকে কমিউনিকেশন সিস্টেম বলে। পৃথিবীতে অনেক ধরনের কমিউনিকেশন সিস্টেম রয়েছে। যেমন-

  • বায়োলজিক্যাল কমিউনিকেশন সিস্টেম: শরীরের বিভিন্ন অংশের মধ্যকার যোগাযোগ। যেমন- মস্তিষ্ক, স্বরযন্ত্র, কান, হাত ইত্যাদি অঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ করা হয়।
  • গ্রাফিক কমিউনিকেশন সিস্টেম: ছবি ও চিহ্নের মাধ্যমে সকল ধরনের যোগাযোগ।
  • টেলিকমিউনিকেশন: দূরবর্তী যোগাযোগের জন্য টেলিফোন ব্যবহার করার মাধ্যমে যে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
  • ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন: বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে যে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেমন- রেডিও, টেলিভিশন, ই-মেইল, টেলেক্স, ফ্যাক্স ইত্যাদি।
    -টেলেক্স এক ধরনের টেলিপ্রিন্টার। এতে একটি টাইপরাইটার থাকে। এর মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে লিখিত বার্তা পাঠানো যায়।
    - ফ্যাক্স এর মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে ছবি ও লেখা পাঠানো যায়।

ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড

এক স্থান হতে অন্য স্থানে কিংবা এক কম্পিউটার হতে অন্য কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের হারকে ডেটা ট্রান্সমিশন স্পিড বলে। এই ট্রান্সমিশন স্পিডকে অনেক সময় Bandwidth বলা হয়। এই ব্যান্ডউইথ সাধারণত Bit Per Second (bps) এ হিসাব করা হয়। একে Band Speed ও বলা হয়। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ বিট কোনো চ্যানেল দিয়ে ট্রান্সমিট করা হয়, তাকে bps বা Bandwidth বলে।

ডেটা ট্রান্সফার গতির উপর ভিত্তি করে কমিউনিকেশন গতিকে তিনভাগে ভাগ করা হয়-

  1. ন্যারো ব্যান্ড (Narrow Band) এর ডেটা গতি সাধারণত ৪৫ - ৩০০ bps পর্যন্ত হয়ে থাকে। একে Sub Voice Band ও বলা হয়। টেলিগ্রাফিতে সাধারণত এই ব্যান্ডকে ব্যবহার করা হয়।
  2. ভয়েস ব্যান্ড (Voice Band) এর ডেটা গতি সাধারণত ৯৬০০ bps পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি সাধারণত টেলিফোনে ব্যবহৃত হয়। তবে কম্পিউটার ডাটা কমিউনিকেশনে কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে ডাটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কিংবা কার্ড রিডার থেকে কম্পিউটারে ডাটা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এই ব্যান্ডউইডথ ব্যবহার করা হয়। ডায়াল আপ এবং নিম্ন গতির DSL-এর ক্ষেত্রে kbps (Kilobits per second) দ্বারা ইন্টারনেটের ডেটা ট্রান্সমিশনের গতি পরিমাপ করা হয়।
  3. ব্রড ব্যান্ড (Broad Band) উচ্চগতি সম্পন্ন ডেটা স্থানান্তর ব্যান্ডউইথ যার গতি কমপক্ষে ১ মেগা বিট পার সেকেন্ড বা Mbps হতে অত্যন্ত উচ্চ গতি পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত কো অ্যাক্সিয়াল ক্যাবল ও অপটিক্যাল ফাইবারে ডেটা স্থানান্তরে ব্রড ব্যান্ড ডেটা ট্রান্সমিশন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন এবং মাইক্রোওয়েভ কমিউনিকেশনেও এই ব্যান্ড ব্যবহৃত হয়।

ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড

ডেটা কমিউনিকেশনে এক ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে ডেটা বিটের বিন্যাসের মাধ্যমে স্থানান্তরের প্রক্রিয়াকে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড বলে। বিটের বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশন মেথডকে প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন এবং সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন এই দুভাবে ভাগ করা হয়েছে।

 ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড

ক) প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন: প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশনে অসংখ্য মাধ্যম দিয়ে একবারে একসাথে অনেক বিট পাঠানো হয়। বিটগুলো ঠিক একই সময়ে একই সাথে স্থানান্তরিত হয়। একসাথে অসংখ্য লাইনে ডেটা পাঠানো হয় বলে এটি অনেক দ্রুতগতির ট্রান্সমিশন। তবে অনেক দূরে ডেটা পাঠাতে হলে এটি বাস্তবসম্মত নয়। দ্রুতগতিসম্পন্ন এই পদ্ধতি অনেক সময় ভিডিও স্ট্রিমিংয়ে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া, প্যারালাল প্রিন্টার পোর্ট ও ক্যাবল ব্যবহার করে কম্পিউটারের সাথে প্রিন্টারের সংযোগ ইত্যাদি এর উদাহরণ।

 প্যারালাল ডেটা কমিউনিকেশন

খ) সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন: সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশনে একটি মাধ্যম দিয়ে একবারে একটি বিট পাঠানো হয়। যেকোনো দূরত্বে অবস্থিত প্রেরক এবং প্রাপকের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে এক বিটের পর অপর একটি বিট স্থানান্তরিত করা হয়। এটি একটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি কেননা, এতে পূর্ববর্তী ডেটা বিট প্রেরণের পর অপরটি প্রেরিত হয়। একটি মাত্র তার ব্যবহার হয় বলে যন্ত্রপাতি তুলনামূলকভাবে সহজ এবং সাশ্রয়ী। পাশাপাশি অনেক তার নেই বলে নিজেদের ভেতর নয়েজের প্রভাব কম। কম্পিউটার এবং প্রায় সকল ডিভাইসে আজকাল যে USB (Universal Serial Bus) পোর্ট দেখা যায় সেটি সিরিয়াল ট্রান্সমিশনের উদাহরণ। সিরিয়াল পদ্ধতিতে ডেটা স্থানান্তরের সময় প্রেরক এবং গ্রাহক দুটি ডিভাইসকেই ক্লক ব্যবহার করতে হয় এবং ক্লকের প্রতি পালসে একটি করে বিট প্রেরণ এবং গ্রহণ করা হয়। এই ক্লক ব্যবহার করে বিটের শুরু ও শেষ বোঝার জন্য একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, যাকে বিট সিনক্রোনাইজেশন বলে। বিট সিনক্রোনাইজেশনের কারণেই প্রাপক সিগন্যাল থেকে ডেটা শনাক্ত এবং পুনরুদ্ধার করতে পারে। বিট সিনক্রোনাইজেশনের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়:

 সিরিয়াল ডেটা কমিউনিকেশন
  1. অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission): এ পদ্ধতিতে প্রেরক হতে গ্রাহকে একটি একটি করে ক্যারেক্টার পাঠানো হয়। এ ধরনের ট্রান্সমিশনে যে কোন সময় ডাটা প্রেরণ ও গ্রহণ সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রতিটি ক্যারেক্টারের সাথে একটি স্টার্ট বিট ও একটি মীপ বিট পাঠানো হয়। প্রতিটি ক্যারেক্টার পাঠানোর মাঝখানে সময়ের ব্যবধান সমান হয় না। ডেটা পাঠানোর আগে একটি স্টার্ট বিট পাঠানো হয় এবং সেই বিটটি দেখে গ্রাহকযন্ত্র বুঝতে পারে ডেটা আসতে শুরু করেছে। ডেটা পাঠানো শেষ হওয়ার পর একটা স্টপ বিট পাঠানো হয় এবং সেটি দেখে গ্রাহক যন্ত্র বুঝতে পারে ডেটা পাঠানো শেষ হয়েছে। যখন প্রয়োজন তখন ডেটা প্রেরণ করা যায় বলে এই ক্ষেত্রে প্রাইমারি স্টোরেজ ডিভাইসের (কম্পিউটারে ব্যবহৃত RAM, Cache, or CPU memory ইত্যাদি) প্রয়োজন হয় না। ধীর গতিতে অল্প পরিমাণ ডেটা পাঠানোর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির ব্যবহার সুবিধাজনক। অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের একটি উদাহরণ হচ্ছে কম্পিউটারের কী বোর্ড। এখানে একটি কী (Key) চাপার পর পরবর্তী কী চেপে টাইপ করার মধ্যবর্তী সময়সীমা অসম বা অনির্ধারিত হতে বাধ্য। এজন্যই এই ট্রান্সমিশন পদ্ধতির নাম অ্যাসিনক্রোনাস রাখা হয়েছে।
  2. সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Synchronous Transmission): সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনকে বলা যায় বিরতিহীন ডেটা ট্রান্সমিশন। এই পদ্ধতিতে বিরতিহীনভাবে প্রেরক যন্ত্র থেকে গ্রাহক যন্ত্রে ডেটা পাঠানো হয় ডাটা প্যাকেট বা ব্লক আকারে ট্রান্সমিট করে। যেহেতু প্রেরিত ডেটা ব্যবহার করে গ্রাহক যন্ত্র তার ক্লককে সমন্বিত করে তাই প্রেরণ করার জন্য কোনো ডেটা না থাকলেও আইডল সিকোয়েন্স (idle sequence) হিসাবে পূর্ব নির্ধারিত ডেটা পাঠানো হয়। সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে প্রেরক-স্টেশনে প্রথমেই ডেটাকে প্রাইমারি স্টোরেজে (কম্পিউটারে ব্যবহৃত RAM, Cache, or CPU memory ইত্যাদি) সংরক্ষণ করে ডেটার ক্যারেক্টারগুলোকে ব্লক বা ফ্রেম আকারে ভাগ করে নেয়। প্রতিবার একটি করে ব্লক বা ফ্রেম ব্লকের সাথে সমন্বয় করে সমান বিরতি দিয়ে প্রেরণ করা হয়। প্রতিটি ব্লক-ডেটার শুরুতে একটি হেডায় ইনফরমেশন এবং ব্লক-ডেটার শেষে একই পরিমাপের একটি ট্রেইলার ইনফরমেশন সিগন্যাল পাঠানো হয় এবং বিশাল নেটওয়ার্কে গন্তব্য খুঁজে বের করার জন্য এর মাঝে সাধারণত প্রেরক ও গ্রাহককে চিহ্নিতকরণের সংখ্যা বা অ্যাড্রেস দেয়া থাকে। গ্রাহক যন্ত্র এই হেডার সিগন্যাল ব্যবহার করে প্রেরকের ক্লক-স্পীডের সাথে সিনক্রোনাইজ বা সমন্বিত করে। ট্রেইলার ব্লকের শেষ নির্দেশ করে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্লকের ভেতরকার ভুল নির্ণয় এবং সংশোধনে সহায়তা করে। প্রযুক্তিগতভাবে এ পদ্ধতি অপেক্ষাকৃত জটিল এবং ব্যয়বহুল হলেও বেশি ব্যান্ডউইথের ডেটা দূরবর্তী স্থানে পাঠানোর জন্য এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তাই বড় ধরনের নেটওয়ার্কসহ মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক, টি. ভি. নেটওয়ার্ক ইত্যাদি ক্ষেত্রে এটি অপরিহার্য।
  3. আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Isochronous Transmission): আসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস -এর একটি মিশ্র পদ্ধতি হচ্ছে আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন। এ প্রক্রিয়ার অ্যাসিনক্রোনাস পদ্ধতির স্টার্ট ও স্টপ বিটের মাঝখানে সিনক্রোনাস পদ্ধতিতে ব্লক আকারে ডেটা ট্রান্সফার করা হয়। যেহেতু পুরোটা সিনক্রোনাস নয়, তাই স্টোরেজ ডিভাইসে ডেটা সংরক্ষণ না করেই যখন প্রয়োজন তখন সেই ডেটা ট্রান্সমিট করা যায়। সাধারণত রিয়েল টাইম অ্যাপ্লিকেশনে এর প্রচলন বেশি। বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন যেমন, অডিও ভিডিও কল-এর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে ডেটা ট্রান্সমিশন হয়ে থাকে।

ডেটা ট্রান্সমিশন মোড

দুটি ডিভাইসের মধ্যে তথ্য বা ডেটা প্রবাহের দিক নির্দেশককে ডেটা ট্রান্সমিশন বা ডেটা কমিউনিকেশন মোড বলে। ডেটা প্রবাহের দিক -এর উপর নির্ভর করে ডেটা ট্রান্সমিশন মোডকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

১) সিমপ্লেক্স (Simplex): কেবলমাত্র একদিকে ডেটা প্রেরণের মোড বা প্রথাকে বলা হয় সিমপ্লেক্স। প্রেরক শুধু ডেটা প্রেরণ করে এবং গ্রাহক শুধু ডেটা গ্রহণ করে। উদাহরণ- রেডিও, টিভি, কী বোর্ড, মাউস, পেজার ইত্যাদি।

 সিমপ্লেক্স

২) হাফ-ডুপ্লেক্স (Half-Duplex) ব্যবস্থায় উভয় দিকে ডেটা প্রেরণের সুযোগ আছে, তবে তা একই সাথে বা যুগপৎ সম্ভব নয়। যে কোনো প্রান্ত একই সময় কেবলমাত্র ডেটা গ্রহণ বা প্রেরণ করতে পারে কিন্তু গ্রহণ বা প্রেরণ এক সাথে করতে পারে না। একটি ডিভাইস ডেটা পাঠালে অন্যটিকে অপেক্ষা করতে হয় তার সুযোগ আসার জন্য। এই পদ্ধতিতে ডেটার ভেতর সংঘর্ষ (collision) না হওয়ার জন্য বিশেষ সার্কিটের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ওয়াকিটকি, ফ্যাক্স, SMS ইত্যাদি হাফ-ডুপ্লেক্স মোডে চলে।

 হাফ-ডুপ্লেক্স

৩) ফুল-ডুপ্লেক্স (Full-Duplex) ব্যবস্থায় একই সময়ে উভয় দিকে ডেটা প্রেরণের সুযোগ আছে। উদাহরণ- মোবাইল, টেলিফোন, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কমিউনিকেশন, টেলিকনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং ইত্যাদি।

 ফুল-ডুপ্লেক্স

ডেটা বিতরণ বা ডেলিভারি মোড

প্রাপকের সংখ্যা ও ডেটা গ্রহণের অধিকারের উপর ভিত্তি করে ডেটা বিতরণ বা ডেলিভারি মোড ভিন্ন ভিন্ন মোডে হতে পারে। যেমন:

ক) ইউনিকাস্ট (Unicast mode) পদ্ধতিতে একটি প্রেরকের কাছ থেকে শুধু একটি গ্রাহকই ডেটা গ্রহণ করতে পারবে। ইউনিকাস্ট মোড সিমপ্লেক্স, হাফ-ডুপ্লেক্স বা ফুল-ডুপ্লেক্স হতে পারে। পেজার, ফ্যাক্স, মোবাইল, টেলিফোন, খেলনা, ওয়াকিটকি, সিঙ্গেল SMS ইত্যাদি ইউনিকাস্ট মোডের উদাহরণ।

 ইউনিকাস্ট

খ) ব্রডকাস্ট (Broadcast) পদ্ধতিতে শুধু একজন প্রেরক থাকে, কিন্তু ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের আওতাধীন সব গ্রাহকই ডেটা গ্রহণ করতে পারে। ব্রডকাস্ট ট্রান্সমিশন শুধু সিমপ্লেক্স হয়ে থাকে। রেডিও, টেলিভিশন ব্রডকাস্ট মোডের উদাহরণ ।

 ব্রডকাস্ট

গ) মাল্টিকাস্ট (Multicast mode) মোড অনেকটা ব্রডকাস্ট মোডের মতো হলেও এই মোডে নেটওয়ার্কের একটি প্রেরক হতে ডেটা প্রেরণ করলে তা শুধু অনুমোদিত সদস্যরা গ্রহণ করতে পারে। মাল্টিকাস্ট ট্রান্সমিশন হাফ-ডুপ্লেক্স বা ফুল-ডুপ্লেক্স-এ হয়ে থাকে। ভিডিও কনফারেন্সিং, চ্যাটিং, গ্রুপ ভিডিও চ্যাটিং ইত্যাদি মাল্টিকাস্ট মোডের উদাহরণ।

 মাল্টিকাস্ট

ডেটা কমিউনিকেশন মাধ্যম

প্রেরক ও প্রাপক স্টেশনের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদানের জন্য যে সমস্ত মাধ্যম (Channel) ব্যবহার করা হয় তাকে ডেটা কমিউনিকেশন মাধ্যম বলে।

ডেটা কমিউনিকেশন মাধ্যম
কমিউনিকেশন মাধ্যমের ডেটা ট্রান্সফার রেটের তুলনা
মাধ্যম সাব-ক্যাটাগরি ডেটা ট্রান্সফার রেট
ক্যাবল কো-এক্সিয়াল 10 Mbps
টুইস্টেড পেয়ার 10 Mbps - 1000 Mbps
ফাইবার অপটিক 10 Mbps -2 Gbps
ওয়্যারলেস রেডিও ওয়েভ 9600 bps-2 Mbps
মাইক্রোওয়েভ 50Mbps
ইনফ্রারেড 1-4 Mbps

ক্যাবল বা তার মাধ্যম

ক্যাবল বিভিন্ন ধরনের হয়। তবে নিম্নলিখিত ক্যাবলগুলোর বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়-

ক) কো-এক্সিয়াল ক্যাবল (Coaxial Cable) : কো-এক্সিয়াল ক্যাবল দুটি সুপরিবাহী বা কন্ডাক্টর (Conductor) ও অপরিবাহী বা পরাবৈদ্যুতিক পদার্থের সাহায্যে তৈরি করা হয়। কো-এক্সিয়াল ক্যাবল সাধারণত কোএক্স (Co-ax) নামে পরিচিত। কো-এক্স ক্যাবলের কেন্দ্র দিয়ে অতিক্রম করে একটি সলিড (Solid) কপার তার। কেন্দ্রের পরিবাহী তার আচ্ছাদিত করার জন্য ও বাইরের পরিবাহী থেকে পৃথক রাখার জন্য এদের মাঝখানে অপরিবাহী পদার্থ থাকে। বাইরের পরিবাহককে প্লাস্টিক জ্যাকেট দ্বারা ঢেকে রাখা হয়। এ ধরনের ক্যাবলের ডাটা স্থানান্তরের গতি বেশি হয়। তবে ডাটা ট্রান্সফার রেট নির্ভর করে তারের দৈর্ঘ্যের উপর। কো-এক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করে এক কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে ডিজিটাল ভাটা প্রেরণ করা যায়।

কো-এক্সিয়াল ক্যাবল

খ) টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল (Twisted Pair Cable) : দুটি পরিবাহী তারকে পরস্পর সুষমভাবে পেঁচিয়ে টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল তৈরি করা হয়। পেঁচানো তার দুটিকে পৃথক রাখার জন্য এদের মাঝে অপরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ক্যাবলে সাধারণত ৪ জোড়া তার ব্যবহৃত হয়। প্রতি জোড়া তারের মধ্যে একটি কমন রংয়ের (সাদা) তার থাকে। অপর তারগুলো হয় ভিন্ন রংয়ের (নীল, সবুজ, কমলা এবং বাদামী)। টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল দুই ধরনের। যথা-
১) আবরণযুক্ত টুইস্টেড পেয়ার (Shielded Twisted Pair = STP)
২) আবরণহীন টুইস্টেড পেয়ার (Unshielded Twisted Pair = UIP): তারের মধ্য দিয়ে যখন সিগন্যাল অতিক্রম করতে থাকে তখন এর শক্তি বা মান ক্রমান্বয়ে লোপ পেতে থাকে।

টুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

গ) ফাইবার অপটিক ক্যাবল : ড্রাই-ইলেকট্রিক পদার্থ দিয়ে তৈরি এক ধরনের খুব সরু ও নমনীয় কাঁচতন্তুর আলোক নল যা আলো নিবন্ধকরণ এবং পরিবহনে সক্ষম। ভিন্ন প্রতিসরাংকের ডাই-ইলেকট্রিক পদার্থ দিয়ে অপটিক্যাল ফাইবার গঠিত। ফাইবার অপটিকে ৩টি অংশ থাকে। যথা-

  • কোর (Core): আলোক সিগন্যাল সঞ্চালনের প্রধান কাজটি করে ফাইবারের অভ্যন্তরের গ্লাস বা প্লাস্টিক কোর।
  • ক্ল্যাডিং (Cladding) : কোরের ঠিক বাহিরের স্তরটি হচ্ছে কাঁচের তৈরি যা কোর থেকে নির্গত আলোকরশ্মি প্রতিফলিত করে তা পুনরায় কোরে ফেরত পাঠায়। এই স্তরটি ক্ল্যাডিং নামেও পরিচিত। কোরের প্রতিসরাংক ক্ল্যাডিংয়ের প্রতিসরাংকের চেয়ে বেশি থাকে।
  • জ্যাকেট (Jacket): প্রতিটি স্বতন্ত্র ফাইবার আবার প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো থাকে। একে জ্যাকেট বলে। জ্যাকেট ফাইবারকে জলীয়বাষ্প, আর্দ্রতা, ঘর্ষণ, মচকানো এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে।
ফাইবার অপটিক ক্যাবল

ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন: প্রেরকযন্ত্র, প্রেরণ মাধ্যম এবং গ্রাহক যন্ত্র এ তিনটি মূল অংশ নিয়ে ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন ব্যবস্থা গঠিত। ফাইবারের মাধ্যমে আমরা যেসব ডেটা পাঠাতে চাই তা সাধারণত অ্যানালগ সিগন্যাল বা ডিজিট্যাল সংকেত হয়ে থাকে। ফাইবার সরাসরি এ ধরনের ডেটা পরিবহণে সক্ষম নয়। গ্রাহক যন্ত্র এই অ্যানালগ সিগন্যাল বা ডিজিটাল সংকেতকে মডুলেশনের মাধ্যমে ফাইবারের মধ্যে দিয়ে পরিবহণ উপযোগী আলোক তরঙ্গে পরিণত করে ফাইবারের মধ্যে নিক্ষেপ করে। অপটিক্যাল ফাইবার আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে ডেটা পরিবহণ করে থাকে। আলোক রশ্মি যখন কোর ক্ল্যাডিং বিভেদতলে আপতিত হয় তখন স্নেলের সূত্রানুসারে প্রতিফলিত হয়। এভাবে বার বার পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে গ্রাহক যন্ত্রে গিয়ে ধরা পড়ে। গ্রাহক যন্ত্র ফাইবার থেকে ডেটা উদ্ধার করে ডিমডুলেশন, অ্যামপ্লিফিকেশন এবং ফিল্টারিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌছে দেয়। আজকাল ইন্টারনেট সেবায় বিপুল পরিমাণ উপাত্ত পরিবহনে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে আন্তঃমহাদেশীয় অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল (Submarine Cable) স্থাপিত হয়েছে।

লেজার: LASER (Light Amplification by Stimulated Emission of Radiation) হলো উদ্দীপিত বিকিরণের সাহায্যে আলোক বিবর্ধন। সাধারণ আলোতে বিভিন্ন মাপের তরঙ্গ থাকে। একই বর্ণের আলোতে একই মাপের তরঙ্গ থাকলেও তারা বিভিন্ন তলে চলে। কিন্তু লেজারে সব তরঙ্গ একই মাপের এবং তারা চলে একই তলে অর্থাৎ লেজার রশ্মি সংসক্ত। মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী থিওডোর হ্যারল্ড মাইম্যান ১৯৬০ সালে লেজার রশ্মি আবিষ্কার করেন। ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন সত্যিকার অর্থে কাজ করার জন্য 1300 nm থেকে 1500 nm লেজার উদ্ভাবনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এলইডি (LED) -এর আলোতে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সুনিদিষ্ট না হওয়ায় ফাইবারের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় বিচ্ছুরণের (Dispersion) কারণে সিগন্যালের বিচ্যুতি ঘটে, সেজন্য এটি দীর্ঘ দূরত্বে ব্যবহার করা যায় না। লেজারের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সুনিদিষ্ট বলে এটি দূরপাল্লার কমিউনিকেশনে ব্যবহার করা যায়। যদিও 1300 nm থেকে 1500 nm এই দুই তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে ফাইবার অপটিক কমিউনিকেশন করা সম্ভব কিন্তু 1500 nm তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের জন্য ফাইবার এমপ্লিফায়ার উদ্ভাবনের কারণে দূরপাল্লার কমিউনিকেশনে বর্তমানে প্রায় একচেটিয়াভাবে 1500 nm তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

DWDM (Dense Wavelength Division Multiplexing) : সাধারণ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলে আলাদা রঙের আলোক রশ্মির জন্য আলাদা আলাদা মাধ্যম ব্যবহার করা হয়। এজন্য একসাথে অনেকগুলো ডেটা পাঠানো সম্ভব হয় না। বিভিন্ন রঙের আলোক রশ্মিকে একই মাধ্যম দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পদ্ধতিকে DWDM প্রযুক্তি বলা হয়, যাতে অনেকগুলো ডেটা একই মাধ্যম দিয়ে পাঠানো সম্ভব।

তারহীন মাধ্যম

ওয়‍্যারলেস কথাটির অর্থ তার বিহীন বা তারহীন। তার বিহীন যোগাযোগ বা ওয়‍্যারলেস কমিউনিকেশন হলো এমন ধরনের যোগাযোগ যেখানে কোন তার বা ক্যাবলের প্রয়োজন হয় না। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন মাধ্যমেকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. বেতার ওয়েভ (Radio wave): ১০ কিলোহার্টজ থেকে ১ গিগাহার্টজের মধ্যে সীমিত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক স্পেকট্রামকে বলা হয় রেডিও ওয়েভ। রেডিও ওয়েভ সহজে তৈরি করা যায় যা অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং বিল্ডিংকেও ভেদ করতে পারে। এ কারণে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ঘরে ও বাইরে ব্যাপকভাবে রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করা হয়। বেতার তরঙ্গ বায়ু মন্ডলের আয়নোস্ফিয়ারে প্রতিফলিত হয়।

২. মাইক্রো ওয়েভ (Micro wave) : মাইক্রোওয়েভ এক ধরনের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ যা সেকেন্ডে প্রায় ১ গিগা বা তার চেয়ে বেশিবার কম্পন বিশিষ্ট। মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে ডাটা স্থানান্তর অর্থাৎ কম্পিউটার প্রদত্ত ডাটা, কথা এবং ছবি ইত্যাদি অনেক দ্রুত স্থানান্তর করা সম্ভব। মাইক্রোওয়েভ সিস্টেমে মূলত দুটো ট্রান্সসিভার (Transceiver) থাকে। এর একটি সিগন্যাল ট্রান্সমিট (Transmit) করে এবং অন্যটি রিসিভ (Receive) করে। মাইক্রোওয়েভ বাঁকা পথে চলাচল করতে পারে না। প্রেরক ও গ্রাহক কম্পিউটারের মধ্যে কোন বাধা থাকলে ডাটা প্রেরণ বাধাগ্রস্থ হয়। তাই মাইক্রোওয়েভ এ্যান্টিনা বড় কোন ভবন বা টাওয়ারের ওপর বসানো হয়। মাইক্রোওয়েভ যোগাযোগ দু' ধরনের হতে পারে। যথা :

ক) টেরেস্ট্রিয়াল (Terrestrial) : ভূপৃষ্ঠে মাইক্রোওয়েভ সংযোগ। এই প্রযুক্তিতে ভূ-পৃষ্ঠেই ট্রান্সমিটার ও রিসিভার বসানো হয়। ট্রান্সমিটার ও রিসিভার মুখোমুখি বা LOS-Line of sight যোগাযোগ করে থাকে এবং সিগন্যাল কোন ক্রমেই মধ্যবর্তী কোন বাধা (যেমন উচ্চ ভবন, পাহাড় ইত্যাদি) অতিক্রম করতে পারে না বা বক্রপথে যেতে পারে না। অল্প পরিসরে ডাটা পাঠানোর ক্ষেত্রে এই টেরেস্ট্রিয়াল মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ট্রান্সমিশনে প্রতি ৪০-৫০ কি.মি, পর পর রিপিটার স্টেশন বসাতে হয়।

খ) স্যাটেলাইট (Satellite): কৃত্রিম উপগ্রহগুলি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩৬০০০ কিলোমিটার উর্ধ্বে Geostationary কক্ষে থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। এটি পৃথিবীর গতির সমান গতিতে পরিভ্রমণ করতে থাকে।

স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন সিস্টেম

পৃথিবীতে অবস্থিত স্টেশনগুলোতে শক্তিশালী এন্টেনা থাকে, যার নাম V-SAT (Very Small Aparture Terminal)। প্রেরক যন্ত্র শক্তিশালী কম্পনবিশিষ্ট মাইক্রোওয়েভ সংকেত উপগ্রহে পাঠায়। স্যাটেলাইটে পাঠানোর পর এই সংকেত অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে পড়ে। স্যাটেলাইট একটি মাইওক্রাওয়েভ রিপিটার হিসেবে কাজ করে। স্যাটেলাইটে অনেকগুলো ট্রান্সপোন্ডার থাকে। ট্রান্সপোন্ডার ক্ষীণ সংকেতকে অ্যামপ্লিফাই (বিবর্ধিত) করে পৃথিবীর গ্রাহক যন্ত্রে ফেরত পায়। এভাবে দুটি V-SAT এর মধ্যে যোগাযোগ হয়। টেলিভিশন সিগন্যাল পাঠানোর কাজে, আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণে স্যাটেলাইট ব্যবহৃত হয়।

৩. অবলোহিত রশ্মি (Infrared wave) : খুব কাছাকাছি অবস্থিত দুইটি ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইনফ্রারেড ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের যোগাযোগে দুই প্রান্তে ট্রান্সমিটার ও রিসিভার থাকে। টেলিভিশন, ভিসিআর এ ব্যবহৃত রিমোট কন্ট্রোলে, বিভিন্ন ডিভাইস যেমন- কী- বোর্ড, মাউস, প্রিন্টার ইত্যাদির ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনে ব্যবহৃত হয়। সূর্য থেকে যে বিকীর্ণ তাপ আসে তা অবলোহিত রশ্মি।

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম

দুই বা ততোধিক ডিভাইসের মধ্যে কোনরূপ ফিজিক্যাল কানেকশন বা ক্যাবল সংযোগ ছাড়াই ডাটা ট্রান্সফার করার পদ্ধতিকে ওয়‍্যারলেস কমিউনিকেশন বলা হয়। যে সমস্ত ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন বেশি প্রয়োজন হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

  • টিভি, ডিভিডি, এয়ারকন্ডিশনার প্রভৃতি যন্ত্রপাতির রিমোট কন্ট্রোল
  • এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল, ট্রাফিক কন্ট্রোল
  • স্যাটেলাইট টেলিভিশন
  • কর্ডলেস টেলিফোন, সেলুলার টেলিফোন, পেজার, ওয়াকিটকি প্রভৃতি
  • GPS (Global Positioning System) এর মাধ্যমে গাড়ি, বিমান, জাহাজ, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ কিংবা ব্যবহারকারীর অবস্থান চিহ্নিতকরণ।

হটস্পট (Hotspot) হল এক ধরনের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক যা মোবাইল ও কম্পিউটার ডিভাইস যেমন: স্মার্ট ফোন, পিডিএ, ট্যাব, নেটবুক, নোটবুক বা ল্যাপটপ ইত্যাদিতে ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করে। বর্তমানে জনপ্রিয় তিনটি হটস্পট প্রযুক্তি হলো-

  1. ওয়াই-ম্যাক্স (WiMAX): WiMAX-এর পূর্ণরূপ হলো Worldwide Interoperability for Microwave Access, বহনযোগ্য কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার সুবিধাকে ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তি বলে। এটি একটি তারবিহীন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রযুক্তি। এতে ফুল ডুপ্লেক্সিং wimax মোড ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে।
  2. ওয়াই-ফাই (Wi-Fi) : Wi-Fi -এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Wireless Fidelity। Wi-Fi হলো তারবিহীন এক ধরনের প্রযুক্তি, যা রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করে। Conventional Wi- Fi local area network এর রেঞ্জ ৩০ মিটার ধরা হয়। এটি WiMAX এর চেয়ে অপেক্ষাকৃত ধীরগতির। এতে হাফ ডুপ্লেক্সিং মোড ব্যবহৃত হয়। ডাচ কম্পিউটার বিজ্ঞানী ভিক্টর ভিক হেরেসকে ওয়াই-ফাই-এর জনক বলা হয়।
  3. ব্লুটুথ (Bluetooth) : ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে কম ক্ষমতাসম্পন্ন বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়। দশম শতাব্দীর ডেনমার্ক এবং নরওয়ের রাজা Harald Bluetooth এর নামানুসারে Bluetooth এর নামকরণ করা হয়। Bluetooth প্রযুক্তির মাধ্যমে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, তার মৌলিক উপাদান হলো পিকোনেট (Piconet)। পিকোনেটে কোন এক মুহূর্তে ১টি মাস্টার ৭ (Master) ও সর্বাধিক ৭টি সক্রিয় দাস (Slave) নোড থাকতে পারে। তবে একটি পিকোনোডে মোট ২৫৫টি দাস নোড থাকতে পারে যার মধ্যে ৭টি ব্যতীত অন্যসবগুলো নিষ্ক্রিয় হিসেবে থাকে। বর্তমানে মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে, কম্পিউটার, মেডিক্যাল ডিভাইস এবং বাসাবাড়ির বিনোদন ক্ষেত্রের অনেক ডিভাইসে ব্লুটুথ প্রযুক্তিটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
জনপ্রিয় তিনটি হটস্পট প্রযুক্তির তুলনামূলক চিত্র
হটস্পট প্রযুক্তি WiMAX Wi-Fi Bluetooth
কভারেজ 10 - 60 কি.মি. 50-200 মি. 10-100 মি.
নেটওয়ার্ক WMAN WLAN WPAN
ফ্রিকুয়েন্সি 2-66 GHz 2.4 -5 GHz 2.4-2.45 GHz
ডেটা ট্রান্সফার হার 70 mbps 10-54 mbps 1 - 4 mbps
স্ট্যান্ডার্ড IEEE 802.16 IEEE 802.11 IEEE 802.15

সেলুলার বা মোবাইল ফোন প্রযুক্তি

দুটি চলনশীল ডিভাইস অথবা একটি চলনশীল ও অন্যটি স্থির ডিভাইসের মধ্যে ডেটা এবং তথ্য আদান-প্রদান করার লক্ষ্যে ডিজাইনকৃত সিস্টেমকে মোবাইল টেলিফোন সিস্টেম বলে। চলনশীল ডিভাইসকে মোবাইল ইউনিট এবং স্থির ডিভাইসকে Land Unit বলে। মোবাইল সেবা প্রদানকারী বা সার্ভিস প্রোভাইডার তার আওতাধীন এলাকাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে। প্রতিটি ভাগকে একটি সেল (Cell) বলে। সেল ষড়ভুজাকার, বর্গাকার, বৃত্তাকার বা অন্য কোনো অনিয়মিত আকারের হতে পারে, যদিও ষড়ভুজাকারই প্রথাগত বা প্রচলিত। এই সেল থেকেই সেলুলার ফোন নামে মোবাইল ফোনের আরেকটি নামকরণ করা হয়েছে। একটি এ্যান্টেনা এবং একটি ছোট অফিস নিয়ে একটি সেল গঠিত হয়। এ্যান্টেনাসহ ছোট অফিসকে বলা হয় বেস স্টেশন (Base Station)।

বর্তমানে প্রচলিত মোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

  1. GSM (Global System for Mobile communication): মোবাইল টেলিফোনি সিস্টেমের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্ট্যান্ডার্ড। সর্বোচ্চ দূরত্ব হলো ৩৫ কিলোমিটার। একে দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন সিস্টেম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি TDMA (Time division multiple access) ব্যবহার করে যেসব মোবাইল ফোন সার্ভিস দেয় সেগুলো হল- SMS (Short Message Service), কল ফরওয়ার্ডিং, আউটগোয়িং কলকে নিয়ন্ত্রণ করা, ইনকামিং কলকে নিয়ন্ত্রণ করা, কল হোডিং, কলার আইডি, কলার ওয়েটিং, মাল্টিপার্টি সার্ভিস ইত্যাদি। ফিনল্যান্ডের প্রকৌশলী ম্যাট্রি ম্যাক্কোনেনকে SMS এর জনক বলা হয়। GSM বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল নেটওয়ার্ক যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে ব্যবহৃত হয়। কাজেই আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা বেশি পাওয়া যায়।
  2. CDMA (Code Division Multiple Access): একটি Advance Digital Technolog যা আমেরিকান ওয়‍্যারলেস্ কমিউনিকেশন গবেষণা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান Qualcom আবিষ্কার করে। এটা ইউনিক কোডিং সিস্টেম ব্যবহার করে রেডিও কমিউনিকেশন প্রযুক্তির দ্বারা ডাটা আদান-প্রদান করে। সিডিএমএ প্রযুক্তিতে ভয়েস এবং ডেটা এ্যাপ্লিকেশনে অনেক ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। ট্রান্সমিশন পাওয়ার খুবই কম। তাই কথা বলার সময় রেডিয়েশন কম হয়। নয়েস (Noise) প্রায় নেই বললেই চলে। সিডিএমএ প্রযুক্তিতে কম পাওয়ার দরকার হয়। এতে ব্যাটারির আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায়। তাই একে গ্রীন ফোন (Green Phone)ও বলা হয়। কিন্তু এতে আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা অপ্রতুল।

মোবাইল ফোন

মোবাইল ফোন তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ। ১৯৭৩ সালে মার্টিন কুপার মটরোলা কোম্পানিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রথম মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেন। এই জন্য মার্টিন কুপারকে মোবাইল ফোনের আবিষ্কারক বলে অভিহিত করা হয়। মোবাইল বা সেলুলার টেলিফোন ইউনিটে মূল তিনটি অংশ রয়েছে। যথা- একটি কন্ট্রোল ইউনিট, একটি ট্রান্সিভার (Transceiver) এবং একটি এন্টেনা সিস্টেম (Antenna System) । এছাড়াও মোবাইল ফোনে নিম্নলিখিত উপাদানগুলো থাকে। যথা-

  • একটি ব্যাটারি যা ফোনের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করে। ব্যাটারির ক্ষমতা অ্যাম্পিয়ার-ঘন্টা (Ah) এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
  • একটি ইনপুট মেকানিজম যা ফোন সিস্টেমের সাথে মিথষ্ক্রিয়া বা যোগাযোগ করতে ব্যবহারকারীদের সহায়তা করে। সবচেয়ে সাধারণ ইনপুট মেকানিজম হচ্ছে কী প্যাড। তবে কিছু স্মার্টফোনে টাচস্ক্রিন রয়েছে
  • ব্যবহারকারীকে জিএসএম মোবাইল ফোনের সার্ভিস প্রোভাইডার একটি SIM কার্ড সরবরাহ করে। SIM (Subscriber Identity Module/Subscriber Identification Module) হলো আইসি সম্বলিত এক ধরনের স্মার্ট কার্ড ।
  • ফোন ডিভাইস IMEI (International Mobile Equipment Identity) নম্বর যারা এককভাবে চিহ্নিত করা থাকে।

বিভিন্ন প্রজন্মের মোবাইল ফোন

প্রথম প্রজন্ম (First Generation IG: 1979-1990): ১৯৭৯ সালে এশিয়ার সর্ববৃহৎ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী জাপানের NTTC (Nippon Telegraph and Telephone Corporation) সেলুলার টেলিফোন উৎপাদন শুরু করে। ১৯৮১ সালে NMT (Nordic Mobile Telephone) কর্তৃক ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইডেনে সীমিত রোমিং সুবিধাসহ ১ম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্কের দ্বিতীয় যাত্রা শুরু করে। প্রথম প্রজন্মের মোবাইল সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য-

  • এনালগ পদ্ধতির রেডিও সিগন্যাল ব্যবহৃত হয়।
  • সেল সিগন্যাল এনকোডিং পদ্ধতি FDMA (Frequency Division Multiple Access)
  • এতে মাইক্রোপ্রসেসর এবং সেমি-কন্ডাক্টর প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।

দ্বিতীয় প্রজন্ম (Second Generation 2G: 1991-2000): অ্যানালগ ট্রান্সমিশনের পরিবর্তে ডিজিটাল ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন চালু হয়। তাই Second Generation-2G কে ডিজিটাল সেলুলার নেটওয়ার্ক বলা হয়। এই সব সুবিধা নিয়ে এবং ভয়েসকে নয়েজমুক্ত করার মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোনের সূচনা হয়। এজন্য সেকেন্ড জেনারেশন মোবাইলকে GSM বা CDMA স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়। ক্রমান্বয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রি- পেইড পদ্ধতি, SMS, MMS ও ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। এ সময়ে আন্তর্জাতিক রোমিং সিস্টেম চালু হয়।

তৃতীয় প্রজন্ম (Third Generation-3G-2001-2008): ২০০১ সালে জাপানের টোকিওতে NTT DoCoMo সর্বপ্রথম পরীক্ষামূলকভাবে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন অবাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার শুরু হয়। GPRS (General Packet Radio System) স্ট্যান্ডার্ডের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। দ্বিতীয় প্রজনন্ম থেকে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোনের প্রধান প্রযুক্তিগত পার্থক্য হচ্ছে সার্কিট সুইচিং ডাটা ট্রান্সমিশনের পরিবর্তে প্যাকেট সুইচিং ডাটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার। এতে অবশ্য উভয় সুইচিং পদ্ধতি চলে। সর্বাধিক ডাটা ট্রান্সফারের মোবাইল টেকনোলজি EDGE (Enhanced Data Rates for Global Evolution) সিস্টেম চালু হয়। তৃতীয় প্রজন্মের ফোনে নিম্নের চারটি স্ট্যান্ডার্ড চালু হয়।

  • HSPA (High speed package Access)
  • WCDMA (Wide band code division multiple access)
  • 3GPP (3rd Gen Partnership Project)
  • UMTS (Universal Mobile Telecommunication System)

ভিডিও কল, ভিডিও কনফারেন্স, ই-কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং, FOMA (Freedom of Multimedia access) ইত্যাদি সুবিধা নিয়ে থ্রি-জি মোবাইল ফোন চালু হয়।

চতুর্থ প্রজন্ম (Fourth Generation 4G: 2009-2020) 4G প্রযুক্তি একটি স্ট্যান্ডার্ড মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম যা ITU (International Telecommunication Union: আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন) কর্তৃক নির্ধারিত IMT-Advanced (International Mobile Telecommunications Advanced) স্ট্যান্ডার্ড এর শর্তসমূহ পূরণ করে। চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল সিস্টেমের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সার্কিট সুইচিং বা প্যাকেট সুইচিংয়ের পরিবর্তে ইন্টারনেট প্রটোকল (IP) ভিত্তিক নেটওয়ার্কের ব্যবহার। ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহারের ফলে LAN WAN, VoIP, Internet ইত্যাদি সিস্টেমে প্যাকেট সুইচিং পরিবর্তে প্রটোকল ভিত্তিক ভয়েস ডাটা ট্রান্সফার করা সম্ভব হয়। এটি LTE (Long Term Evolution), WiMAX, HSPA+ (Evolved High Speed Packet Access) স্ট্যান্ডার্ডে কাজ করে থাকে। আল্ট্রা ব্রড-ব্যান্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু হয়। এর গতি 3G 'র চেয়ে ৫০ গুণ বেশি। চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল 4G সিস্টেমের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো-

  • ত্রি-মাত্রিক ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা।
  • USB পোর্টের মাধ্যমে সরাসরি কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়।
  • ওয়ারলেস ইন্টারনেট সুবিধা।
  • ইন্টারনেট মডেম ও সিম কার্ড ব্যবহার করে সরাসরি কম্পিউটারে ইন্টারনেট অ্যাকসেস করার সুযোগ তৈরি হয়।

মোবাইল ওয়েব অ্যাকসেস, আই. পি টেলিফোনি, গেমিং সার্ভিসেস, হাই ডেফিনিশন মোবাইল টিভি, ভিডিও কনফারেন্সিং, থ্রিডি টিভি ইত্যাদি ক্ষেত্রে 4G প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়।

পঞ্চম প্রজন্ম (Fifth Generation: 2020- বর্তমান): মোবাইল ফোনের মধ্যে অত্যাধুনিক ও সর্বশেষ সংস্করণ। এ ধরনের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ওয়্যারলেস ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (World Wide Wireless Web) বা সংক্ষেপে WWWW নামে পরিচিত। এ ধরনের মোবাইল ফোনের স্ট্যান্ডার্ডগুলোর মধ্যে 5G NR (New Radio Technology), RAT (Radio Access technology), MIMO (Multiple input multiple output) অন্যতম। এই প্রজন্মের মোবাইল ফোনের পারফর্ম্যান্স 4G 'এর তুলনায় অনেকগুণ বেশি এবং অনেক দ্রুতগতিতে ডেটা ট্রান্সফার করতে সক্ষম। এর মাধ্যমে 4K টিভি বা ভিডিও (4000×2000 পিক্সেল) উপভোগ করা যায়। 2018 অলিম্পিক গেমস- এ দক্ষিণ কোরিয়া 5G নেটওয়ার্কের ব্যবহার প্রাথমিকভাবে প্রদর্শন করে সফলতা দেখিয়েছে।

মোবাইল ইন্টারনেট

GPRS এবং EDGE প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সিস্টেমই হলো মোবাইল ইন্টারনেট। অবশ্য মোবাইল ফোনে WAP (Wireless Application Protocol) প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়। ফলে মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য কোন প্রকার ক্যাবল বা মডেমের প্রয়োজন হয় না। আর এই WAP প্রযুক্তির কারণেই মোবাইল ফোনের সাহায্যে খুব দ্রুত ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল আদান-প্রদান, ই-ব্যাংকিং, ই-কমার্স ইত্যাদি কার্যাবলি সহজেই সম্পাদন করা যায়।

ডায়ালিং কোড

আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোড হলো সংক্ষিপ্ত বর্ণানুক্রমিক বা সাংখ্যিক ভৌগোলিক সংকেত যা ডেটা প্রক্রিয়াকরণ ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ ও এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে। আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোডকে দেশের কোডও (Country Code) বলা হয়। যেমন- বাংলাদেশের ডায়ালিং কোড +৮৮০।

  • NWD : National Wide Dialing
  • ISD : International Subscriber Dialling/ International Standard Dialing
  • STD : Subscriber trunk dialling / Subscriber Toll dialling
নবীনতর পূর্বতন