নৈতিকতা কি? এর উৎস ও প্রকৃতিসহ বিশদ আলোচনা

নৈতিকতা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবেই নীতিবিদ্যা প্রসঙ্গটি সামনে আসে । কারণ নীতিবিদ্যার মূল আলোচ্য বিষয়ই হলো নৈতিকতা । নীতিবিদ্যার ইংরেজি প্রতিশব্দ Ethics কথাটি এসেছে গ্রিক Ethica শব্দ থেকে। আবার এ Ethica এসেছে Ethos থেকে, যার অর্থ চরিত্র, রীতিনীতি বা অভ্যাস। নীতিবিদ্যা হচ্ছে মানুষের চরিত্র বা আচরণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

নীতিবিজ্ঞানী ম্যাকেঞ্জি বলেন- "নীতিবিদ্যা হলো আচরণের মঙ্গল বা উচিতের বিজ্ঞান।"

মানুষের আচরণ বা ঐচ্ছিক ক্রিয়া (Voluntary action) হচ্ছে নীতিবিদ্যার আলোচ্য বিষয়। নীতিবিদ্যা একটি মানদণ্ড বা আদর্শ কে সামনে রেখে পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে মানুষের আচরণের মূল্যায়ন করে এবং এ আদর্শের সাথে তুলনা করে মানুষের ঐচ্ছিক ক্রিয়াকে উচিত বা অনুচিত বলে বিচার করে । যে কাজ আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ তাকে বলা হয় উচিত, আর যে কাজ আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় তাকে বলা হয় অনুচিত। জীবনের পরমাদর্শকে লাভ করার জন্য মানুষের আচরণ কেমন হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করাই নীতিবিদ্যার কাজ। ব্রিটিশ দার্শনিক জন লক নীতিবিদ্যাকে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এরিস্টটলের মতে, নীতির মধ্যেই মানুষ, নীতিই মানুষের শ্রেষ্ঠ স্বভাব। সুতরাং স্বভাবের এ শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার জন্যই নীতিবিদ্যা পাঠ প্রয়োজন।

নৈতিকতা

নৈতিকতা (Morality)

নীতিশাস্ত্রের আলোচ্য বিষয় নৈতিকতা। দৈনন্দিন কাজকর্ম ও সামাজিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মানুষ যে সকল নীতি, আদর্শ এবং সামাজিক, ধর্মীয় ও আইনগত অনুশাসন মেনে চলে তার সমষ্টিকে নৈতিকতা বলে। নৈতিক অনুশাসনের প্রভাবে মানুষ আইন মানে, শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করে না এবং রাষ্ট্রের অনুশাসনকে শ্রদ্ধা করে। নাগরিক সচেতনতার মানদণ্ড হলো নৈতিক অনুশাসন। নৈতিকতার ইংরেজি শব্দ Morality; ল্যাটিন শব্দ Moralitas থেকে এটি এসেছে। Moralitas হলো ভালো আচরণ, চরিত্র প্রভৃতি। কাজেই Morality বা নৈতিকতা হলো কতিপয় বিধান, যার আলোকে মানুষ তার বিবেকবোধ ও ন্যায়বোধ ধারণ ও প্রয়োগ করে থাকে।

Dictionary of Social Science গ্রন্থে বলা হয়েছে- "নৈতিক অধিকার যা মানুষের নৈতিক অনুভূতির উপর নির্ভরশীল এবং এগুলো কোনো বৈধ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুরক্ষিত নয়।"
জোনাথন হেইট বলেন- "ধর্ম, ঐতিহ্য এবং মানব আচরণ- এ তিনটি থেকেই নৈতিকতার উদ্ভব হয়েছে।"
নীতিবিদ ম্যুর বলেছেন- "শুভর প্রতি অনুরাগ ও অশুভর প্রতি বিরাগই হচ্ছে নৈতিকতা।"
এনসাইক্লোপিডিয়া আমেরিকানা গ্রন্থে নৈতিকতার ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়েছে- "নৈতিকতা হলো দর্শনের এমন একটি শাখা যার মাধ্যমে মানুষ নির্দিষ্ট নৈতিক আচরণ ও কার্যক্রমের সূত্র সম্পর্কে মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সচেষ্ট হয়।"

নৈতিক অধিকার বলতে আমরা সে সব অধিকারকে বুঝি যা নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে উদ্ধৃত সমাজের নৈতিকতা বা ন্যায়বোধ থেকে নৈতিক অধিকারের উদ্ভব। যে গুণ মানুষকে অন্যায় হতে বিরত রাখে এবং ন্যায় কাজে নিয়োজিত করে, তাই নৈতিকতা । যেমন- দরিদ্রের সাহায্য পাবার অধিকার । নৈতিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক প্রবর্তিত নয়। এ অধিকার ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পারে না । তাই নৈতিকতা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। নৈতিকতা সামাজিকভাবে স্বীকৃত গুণ ; তবে নৈতিকতা বাধ্যতামূলকভাবে আরোপযোগ্য নয়।

তবে নৈতিক অধিকারের পিছনে সমাজের সমর্থন রয়েছে। কোনো ব্যক্তি এ অধিকার ভঙ্গ করলে সমাজে তার তীব্র সমালোচনা হতে পারে। সার্থক ও সুন্দর সামাজিক জীবনের জন্য নৈতিক অধিকার অত্যাবশ্যক। নৈতিক অধিকার ব্যক্তি ও সমাজভেদে বিভিন্ন রূপ ধারণ করে। নৈতিক কর্তব্য ব্যক্তি ও সমাজের নীতিবোধের উপর নির্ভরশীল। কোনো ব্যক্তি নৈতিক কর্তব্য পালন না করলে তাকে সামাজিক ভর্ৎসনা ও সমাজ কর্তৃক নিন্দনীয় হতে হয়। যেমন- বৃদ্ধ বয়সে পিতামাতাকে প্রতিপালন করা সন্তানের নৈতিক কর্তব্য। কিন্তু কোনো সন্তান যদি এ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে তবে রাষ্ট্র আইনগত ভাবে তাকে কোন প্রকার শাস্তি দিতে পারে না। কিন্তু সমাজ তাকে ভর্ৎসনা ও নিন্দা করতে পারে। অপরদিকে নাগরিকগণ আইনগত কর্তব্য পালনে বাধ্য থাকে। আইনগত কর্তব্য ভঙ্গকারীকে রাষ্ট্র শাস্তি দিতে পারে ।

ধর্ম ও নৈতিকতা সম্পর্কে ম্যাকিয়াভেলির মনোভাব

ম্যাকিয়াভেলির সমগ্র রাজনৈতিক দর্শন তাঁর সুপ্রসিদ্ধ ও বহুল পঠিত The Prince ও Discourses গ্রন্থদ্বয়ের মধ্যে বিধৃত হয়েছে। উভয় গ্রন্থেই রাষ্ট্র সৃষ্টির ভিত্তি, বাষ্ট্রের উন্নতি ও অবনতির কারণ সমূহ- বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে । উভয় গ্রন্থের আলোচ্য বিষয় মোটামুটিভাবে এক ও অভিন্ন। তবে The Prince গ্রন্থটি রাজতান্ত্রিক ও স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং Discourses, গ্রন্থটি রোমান প্রজাতন্ত্রের সম্প্রসারণ সম্পর্কিত একটি আলোচনা ।

ম্যাকিয়াভেলির রাষ্ট্র দর্শনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ধর্ম ও নৈতিকতা সম্পর্কে তাঁর মনোভাব। ম্যাকিয়াভেলি ধর্ম ও নৈতিকতাকে রাজনীতি থেকে পৃথক করেছেন। প্রাচীন যুগে নৈতিকতা এবং মধ্যযুগে ধর্মকে আমরা রাষ্ট্রচিন্তার মূল নিয়ামক হিসেবে দেখতে পাই যদিও এরিস্টটল নীতিশাস্ত্রকে রাষ্ট্রতত্ত্ব থেকে আলাদা করে দেখছেন তথাপিও তাঁর মতে রাষ্ট্র মূলত একটি নৈতিক প্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যদিও জন অব প্যারিস, মার্সিলিও অব পাদুয়া প্রমুখ পার্থিবপন্থী চিন্তাবিদগণ রাষ্ট্রকে গির্জা থেকে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে মনে করেছেন। তথাপিও তাঁরা ধর্মকে পার্থিব জীবনের পরিমণ্ডল থেকে একেবারে পৃথক করে দেন নাই। বরং ধর্মকে রাষ্ট্রের একটি সহায়ক উপাদান হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন।

সুতরাং প্রাচীন বা মধ্য কোনো যুগেই ধর্ম ও নৈতিকতাকে রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ ভাবে আলাদা করা হয়নি। এ দিক থেকে ম্যাকিয়াভেলিই হচ্ছে প্রথম চিন্তাবিদ যিনি এ দু'টো জিনিসকে অত্যন্ত নির্মমভাবে রাজনীতি থেকে পৃথক করেছেন এবং তাঁর এই কৃতকর্মের স্বপক্ষে যুক্তি প্রমাণ উদ্ধৃত করে তা যে যথার্থ তা প্রমাণ করারও চেষ্টা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, রাষ্ট্রই হচ্ছে জীবনে চূড়ান্ত লক্ষ্য এবং সেদিক দিয়ে তা অন্য কোনো উচ্চতর ক্ষমতার অধীন হতে পারে না। মানবিক আইনের সাথে Reason ও Revelation এর সম্পর্ক থাকলেই সেটা ঐশ্বরিক আইন হবে । তিনি বলেন: State is not a product of divine origin. It is a product of human being. So everything depends on human law. তিনি বলেন যে, রাষ্ট্রই হচ্ছে সর্বোচ্চ ক্ষমতা এবং তার উপর উচ্চতর কোনো ক্ষমতা থাকতে পারে না। এতে ধর্ম ও নৈতিকতা কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না।

মধ্যযুগে সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হত যে, পার্থিব ক্ষমতা রাষ্ট্র, ধর্ম, নৈতিকতা, ঐশ্বরিক আইন বা প্রাকৃতিক আইনের উচ্চতর ক্ষমতাগুলোর অধীন। কিন্তু ম্যাকিয়াভেলি বলেন যে, ঐশ্বরিক আইন বা প্রাকৃতিক আইন উচ্চতর ক্ষমতাগুলোর অধীন। তিনি বলেন যে, ঐশ্বরিক আইন বলে কোনো আইন নাই। তাঁর মতে, শাসক রাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য প্রয়োজনবোধে নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে কঠোর, নির্মম, বেআইনি ও অন্যায়ের পথে অগ্রসর হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তিনি ব্যক্তিগত জীবনেও নৈতিকতা বিবর্জিত ছিলেন।

সরকারি নৈতিকতা (Governmental Morality) : রাজা বা শাসক রাষ্ট্র শাসনের জন্য যা কিছু অনুকূল তাই করে যাবে। ব্যক্তিগত লক্ষ্যে জীবনে যে কাজ করা অন্যায় সে কাজ যদি রাষ্ট্রের পক্ষে অনুকূল হয় তবে শাসকের পক্ষে তা করা অন্যায় হবে না।

ব্যক্তিগত নৈতিকতা (Individual Morality) : ব্যক্তিগত জীবনে মানুষ ধর্ম ও নৈতিকতার অনুশাসন মেনে চলবে। শাসিত শ্রেণি নৈতিকতা বিবর্জিত হতে পারবে না। তারা সকল প্রকার দুর্নীতি ও অন্যায় বর্জন করে ন্যায়ের পথে অগ্রসর হবে। প্লেটোর ন্যায় ম্যাকিয়াভেলি মনে করেন এই দ্বৈত নৈতিকতার নীতি প্রয়োজন হয় না। সুতরাং স্পষ্টই বুঝা যায় যে, রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ব্যক্তিগত জীবনে নীতি বিবর্জিত বা ব্যভিচারী ছিলেন না। (He was unmoral but not immoral) ম্যাকিয়াভেলি অবশ্য মনে করেন যে, ধর্ম ও নৈতিকতার পথ অনুসরণ করে রাষ্ট্র যদি তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারে তবে তা হবে উত্তম। কিন্তু যেহেতু মানুষ প্রকৃতিগত ভাবে দুর্নীতি পরায়ণ, প্রতারক, লোভী ও হিংসুটে কাজেই এ পথে চলে রাষ্ট্র কোনোদিন তার উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারে না।

যদিও ম্যাকিয়াভেলি রাজনীতি হতে নৈতিকতাকে পৃথক করেন এবং নৈতিকতাকে দ্বৈত মাপকাঠির ভিত্তিতে বিচার করেন তথাপিও রাষ্ট্র শাসনে তিনি আইনের গুরুত্ব যথাযথভাবে উপলব্ধি করেন। রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করাকে তিনি শাসকের অন্যতম লক্ষ্য ও কর্তব্য বলে বিবেচনা করেন। একজন শাসক বা নরপতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেন এবং তিনি যে আইন প্রয়োগ করবেন উহার মাধ্যমে রাষ্ট্রের জনগণের জাতীয় চরিত্র নির্ধারিত হবে। নৈতিক অধিকারের কোনো শ্রেণি বিভাজন নেই। নৈতিক অধিকারের পেছনে কোন আইনগত স্বীকৃতি থাকে না। প্রতিবেশীর প্রতি কর্তব্য, গুরুজনের প্রতি ভক্তি, দুর্গতের প্রতি সহানুভূতি, শিষ্টাচার, সদাচার ইত্যাদি নৈতিকতা অধিকারের অন্তর্ভুক্ত।

নৈতিকতার উৎস ও প্রকৃতি

নৈতিক অধিকারের উৎস হচ্ছে নীতিবোধ ও বিবেক বুদ্ধি। কিন্তু আইনগত অধিকারের উৎস হচ্ছে রাষ্ট্র আইনগত অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত। আইনগত অধিকার ভঙ্গ করলে রাষ্ট্র অপরাধীকে আইন অনুযায়ী শাস্তি দিতে পারে। কিন্তু নৈতিক অধিকার ভঙ্গকারীকে রাষ্ট্র কোনো প্রকার শাস্তি দিতে পারে না। তবে নৈতিক অধিকার ভঙ্গ করলে সমাজে এর তীব্র সমালোচনা হতে পারে। সকল অধিকারই নৈতিক ও আইনগত শর্ত দ্বারা পুষ্ট। নৈতিক ও আইনগত অধিকার পৃথক হলেও উৎস ও তাৎপর্যের দিক থেকে অভিন্ন নাগরিকের সমস্ত ধারণাটি সামাজিক ধারণা থেকে উদ্ভূত। নৈতিক ও আইনগত উভয় অধিকারই নাগরিকের মঙ্গলের জন্য। সমাজের নীতিবোধকে উপেক্ষা করে আইনগত অধিকার টিকে থাকতে পারে না।

নৈতিকতা ও মূল্যবোধ

আদর্শ সমাজ গঠনের জন্য এ মূল্যবোধের প্রয়োজন অত্যন্ত বেশি। জীবনের সকল ক্ষেত্রে মনুষ্যত্ব ও নীতি আদর্শের শিক্ষাকে ধরে রাখার চেষ্টা ও চেতনাই হলো নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ। নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ মানুষকে উত্তম চরিত্রবান করে গড়ে তোলে। ফলে মানুষ সমাজে সম্মান ও মর্যাদা লাভ করে। সকলে এ আদর্শ অনুশীলন করলে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয় ।

অন্যদিকে সমাজে নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধ না থাকলে সে সমাজে শান্তি থাকে না। দুর্নীতি সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতি, প্রতারণা ইত্যাদি ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যে দয়া, মায়া, ঐক্য, ভালবাসা ইত্যাদি সদগুণাবলির চর্চা থাকে না । মানুষ পরস্পরকে অবিশ্বাস ও সন্দেহ করে ফলে সমাজে নানা অরাজক ও অশান্তির সৃষ্টি হয়। তাই উত্তম চরিত্র গঠন করার জন্য নৈতিকতা চর্চা করা সবার জন্য কাম্য ।

নৈতিকতা, সুশাসন ও মূল্যবোধের সম্পর্ক

নৈতিকতা ও মূল্যবোধের ঘাটতি সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে। আবার সুশাসনের অভাব হলে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের সঠিক বিকাশ ঘটে না। ফলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা যায়। এক্ষত্রে সুশাসন, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো নৈতিকতা ও মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ। নৈতিকতা মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ ছাড়া সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত করা যায় না। সামাজিকভাবে শুদ্ধ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য উল্লিখিত তিনটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। এদের যে কোন একটির অভাব হলেই সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। তাই, সমাজজীবনে ও জাতীয় পর্যায়ে সকল কর্মকান্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় এবং উন্নতি ও সমৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে নৈতিকতা , মূল্যবোধ ও সুশাসনের বাস্তব প্রয়োগ একান্ত অপরিহার্য।

দর্শন (Philosophy)

সর্বজন স্বীকৃত দর্শনের আলোচ্য বিষয় তিনটি। যথা- অধিবিদ্যা, জ্ঞানবিদ্যা ও মূলবিদ্যা। 'অধিবিদ্যা' বিষয়টি প্রথম থেকেই মূখ্য দর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। দর্শনের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি মূলত 'মৌলিক আদিসত্তা' নিয়ে আলোচনা করে।

  • দর্শনের জনক : সক্রেটিস
  • আধুনিক দর্শনের জনক : ডেকার্ট
  • পাশ্চাত্য দর্শনের জনক : থেলিস
  • মুসলিম দর্শনের জনক : আল কিন্দি

সক্রেটিস (৪৭০-৩৯৯ খ্রিষ্টপূর্ব) ছিলেন গ্রিসের দার্শনিকদের মধ্যে সবচেয়ে খ্যাতিমান। অন্যায় শাসনের প্রতিবাদ করায় গ্রিসের শাসক গোষ্ঠী ৩৯৯ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এ মহান দার্শনিককে হেমলক লতার তৈরি বিষ খাইয়ে হত্যা করে। সক্রেটিসকে 'সব জ্ঞানীদের গুরু' বলা হয়। সক্রেটিসের বিখ্যাত উক্তি-

  • Know thyself. (নিজেকে জানো)
  • An unexamined life is not worth living.
  • Virtue is knowledge (সৎ গুণই জান)

প্লেটো একজন গ্রিক দার্শনিক। সক্রেটিসের ছাত্র প্লেটো তাঁর চিন্তাগুলো ধরে রাখেন 'দি রিপাবলিক' নামক গ্রন্থ রচনা করে। এই গ্রন্থে তিনি একটি 'আদর্শ রাষ্ট্র' এর ধারণা দেন। তাঁর মতে, আদর্শ রাষ্ট্রের শাসনভার থাকবে দার্শনিক রাজাদের ওপর; প্রজ্ঞা ও যুক্তিই হবে যাদের মূল চালিকা শক্তি। ক্ষমতার প্রতি তারা মোহান্বিত হবেন না, পক্ষপাতিত্ব তাদের কাছে থাকবে অজানা। দার্শনিক রাজারা স্ববিবেচনায় শাসনকার্য পরিচালনা করবেন, তাদের পেছনে কোনো প্রকার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে না। প্লেটো মনে করেন, শাসক যদি আইন না মেনে চলেন তবে আইন থাকা অর্থহীন, আবার শাসক যদি নীতিহীন কিছু না করেন, তবে আইন থাকা অপ্রয়োজনীয়। প্লেটো দর্শনের স্কুল 'Academia প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সক্রেটিসের শিক্ষার বক্তব্যগুলো নিয়ে 'ডায়ালগস অব সক্রেটিস' নামে আরেকটি গ্রন্থ রচনা করেন। প্লেটো 'সদগুণ' বলতে চারটি মৌলিক গুণাবলীর কথা বলেছেন। যথা-প্রজ্ঞা (জ্ঞান), সাহস, আত্মনিয়ন্ত্রণ (আত্মসংযম) ও ন্যায়পরায়ণতা। জ্ঞান ছাড়া মানুষ তার কর্তব্য স্থির করতে পারে না, জ্ঞান নৈতিক জীবনের এক অপরিহার্য শর্ত। প্রজ্ঞা হলো একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উপযুক্ত সময়ে সঠিক কাজ করার সক্ষমতা। সাহসিকতা হলো সুখের প্রলোভনকে জয় করার ইচ্ছাশক্তি। ভবিষ্যতের বৃহত্তর এবং মহৎ উদ্দেশ্য লাভের জন্যে বর্তমানের দুঃখ-কষ্ট সহ্য করার শক্তি হলো সাহসিকতা। আত্মসংযম ব্যক্তির নৈতিক প্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোনো ব্যক্তি যদি আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ষড়রিপুকে দমন করতে না পারে, তাহলে তার নৈতিক প্রগতি ব্যাহত হয়। ন্যায়পরায়ণতা হলো ব্যক্তিগত স্বার্থ চিন্তাকে পরিবর্তন করা ও নিরপেক্ষতা অবলম্বন করা। ন্যায়পরায়ণতা সকল সামাজিক সদগুণের ধারক। প্লেটোর বিখ্যাত উক্তি-

  • Virtue is Knowledge and Education is the main thing to acquire virtue.
  • Knowledge is virtue (জ্ঞানই পূণ্য)
  • শাসক যদি ন্যায়পরায়ণ হন তাহলে আইন নিষ্প্রয়োজন, আর শাসক যদি দুর্নীতিপরায়ণ হন তাহলে আইন নিরর্থক।

এরিস্টটল একজন গ্রিক দার্শনিক এরিস্টটল প্লেটোর ছাত্র ছিলেন। তাঁর একটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম 'দ্যা পলিটিক্স'। তিনি 'লাইসিয়াম'-এর প্রতিষ্ঠাতা। এরিস্টটল আলেকজান্ডারের গৃহশিক্ষক ছিলেন। দর্শনচিন্তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধারণা 'গোল্ডেন মিন' (Golden Mean) বা 'সুবর্ণ মধ্যক' এর উদ্ভব ঘটান এরিস্টটল। যা চরম তাই ভাইস (Vice); দুর্নীতি, অধর্ম ও দোষ। আবার দুই চরমের মাঝখানে যা থাকে তাই ভার্চু (Virtue); সুর্নীতি, ধর্ম ও গুণ। একদিকে বেপরোয়া সাহস, অন্যদিকে ভীরুতা- দুইয়ের মাঝখানে থাকে যথার্থ সাহস। এটিই হচ্ছে 'গোল্ডেন মিন'। এরিস্টটলের উক্তি-

  • Man Is Social and Political by Nature (মানুষ স্বভাবতই সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব)।
  • Man without society is either a beast or a God. (যে ব্যক্তি সমাজে বাস করে না, সে হয় দেবতা না হয় পশু)।
  • মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই রাজনীতির কবি।

ইবনে খালদুন : (১৩৩২ - ১৪০৬ খ্রি.) ছিলেন মুসলিম বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি তিউনিসিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ 'কিতাবুল ইবার' (৭ খণ্ড)। প্রথম খণ্ড 'মুকদ্দিমা' (Muqaddimah) নামে পরিচিত।

থমাস হবস : (১৫৮৮- ১৬৭৯ খ্রি.) একজন ইংরেজ দার্শনিক। তিনি লেভিয়েথন (১৬৫১ খ্রি.) নামক গ্রন্থে 'সামাজিক চুক্তি 'তত্ত্ব' ধারণা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর বিখ্যাত উক্তি-

  • মানুষ স্বভাবতই স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক।
  • Knowledge is power.
  • Leisure is the mother of philosophy.

ইমানুয়েল কান্ট : (১৭২৪- ১৮০৪ খ্রি.) একজন জার্মান দার্শনিক। তাঁর বিখ্যাত উক্তি, "সংস্কৃতি হলো মানুষের ভিতরের দিক।" কান্ট 'কর্তব্যের নৈতিকতা'র ধারণা প্রবর্তন করেন। তিনি কর্মের সাথে সম্পৃক্ত করে কর্তব্যের ধারণাকে এনেছেন। তাঁর মতে কর্তব্য হলো সূত্রের (সার্বজনীন নীতির) প্রতি সম্মান বা ভক্তি থেকে কর্ম করার বাধ্যবাধকতা। কান্টের নীতি-তত্ত্ব অনুসারে মানুষের নৈতিক মূল্যায়ন তার দ্বারা উদ্দেশ্যগত অর্জনের সমাহারের উপর নির্ভর করে না, করে ইচ্ছার ভালোত্বের ওপর, নির্বাচনের নীতির বৈশিষ্ট্যের ওপর এবং কেবল ইচ্ছাকরণের ওপর। তাঁর নীতিতত্ত্বের একটি সুবিখ্যাত উক্তি হচ্ছে 'কেবল কর্তব্যের জন্যই কর্তব্য (Duty for Duty's sake) করতে হবে, অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়'। কান্টের মতে, ফলের কথা চিন্তা না করে, কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যের কথা না ভেবে, অনুভূতির বশবর্তী না হয়ে কেবল নৈতিক কর্তব্যের কথা স্মরণ করে যদি কাজ করা হয় তবেই কর্তব্যের জন্য কর্তব্য করা হয়। কান্টের নীতিবিদ্যার মূলনীতি হচ্ছে সদিচ্ছা (Goodwill) তাঁর মতে, যে ইচ্ছা কোনো ফলের প্রত্যাশা ছাড়াই কর্তব্যবোধের উদ্রেক করে সেটাই হলো সদিচ্ছা। নৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকে সদিচ্ছার সৃষ্টি হয়। জ্ঞান, অধ্যবসায়, দৃঢ়তা, কর্মক্ষমতা, সাহস, সুস্বাস্থ্য, সম্পদ, সুনাম ইত্যাদি ভাল জিনিস বলে বিবেচিত সব কিছু থেকেই বঞ্চিত কোন ব্যক্তি যদি কেবল ভাল ইচ্ছার অধিকারী হয়, তবুও নৈতিকতার বিচারে সে পূর্ণ।

জেরেমি বেন্থাম : (১৭৪৮-১৮৩২ খ্রি.) একজন ইংরেজ দার্শনিক, আইনতত্ত্ববিদ এবং সমাজ সংস্কারক। যুক্তরাজ্যের অধিবাসী বেন্থাম 'আধুনিক উপযোগবাদ' এর জনক। তাঁর মতে নীতি হওয়া উচিত, প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ইচ্ছা পূরণের মাধ্যমে "সর্বাধিক লোকের সর্বাধিক উপকার"। সর্বাধিক লোকের সর্বাধিক সুখই নৈতিক আদর্শ। যে কাজ সর্বাধিক লোকের সর্বাধিক সুখ উৎপাদনের উপযোগী সে কাজই ভাল বা যথোচিত। আর যে কাজ সেই সুখ উৎপাদনের উপযোগী নয় সে কাজ মন্দ বা অনুচিত। উপযোগিতা বা কার্যকারিতা (Utility)-ই নৈতিক বিচারের মাপকাঠি। এজন্যই এ মতবাদ উপযোগবাদ (Utilitarianism) নামে পরিচিত।

অগাস্ট কোৎ : (১৭৯৮ - ১৮৫৭ খ্রি.) একজন ফরাসি দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী। তাঁকে সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

বার্ট্রান্ড আর্থার উইলিয়াম রাসেল : (১৮৭২-১৯৭০ খ্রি.) একজন ব্রিটিশ দার্শনিক, গণিতবিদ এবং সাহিত্যিক। দার্শনিক হলেও তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার (১৯৫০ খ্রি.) লাভ করেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে- 'Political Ideals' (১৯১৭ খ্রি.), 'Proposed Roads to Freedom' (১৯১৮ খ্রি.), 'Power: A New Social Analysis' (১৯৩৮ খ্রি.), 'Human Society in Ethics and Politics' (১৯৫৪ খ্রি.), 'My Philosophical Development' (১৯৫৯) প্রভৃতি। রাসেলের 'Human Society in Ethics and Politics' গ্রন্থটি রাজনীতি এবং ধর্ম উভয়ের সাথে সম্পর্কিত নৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থানের বিবরণ।

ইংরেজ দার্শনিক জন স্টুয়ার্ট মিল : এর দর্শনবিষয়ক প্রবন্ধ 'On Liberty' (১৮৫৯ খ্রি.)।

(জি সি দেব) গোবিন্দ চন্দ্র দেব : (১৯০৭- ১৯৭১ খ্রি.) বাঙালি দার্শনিক ছিলেন। বাঙালি দর্শনের ইতিহাসে শহিদ দার্শনিক জি সি দেব 'প্রাচ্যের সক্রেটিস' নামেই সর্বাধিক খ্যাত। তাঁর চিন্তায় একদিকে যেমন স্থান পেয়েছে গভীর ও সূক্ষ্ম দার্শনিক তত্ত্বালোচনা, অন্যদিকে সমাজ, জীবন, সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি ও ধর্মবিষয়ক ভাবনা। তাঁর চিন্তাধারার মূলে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে এক সমন্বয়ী ভাবধারা এক বিশ্বজনীন মানবপ্রেম, সাম্য ও মৈত্রীভাবনা। তিনি তাঁর সমন্বয়ী দর্শনে বস্তুবাদকে অধ্যাত্মবাদে এবং অধ্যাত্মবাদকে বস্তুবাদে রূপান্তরিত করে এরই ভিত্তিতে একটি সার্থক জীবন দর্শন গড়ে তুলেছেন। তাঁর মতে, সার্থক দর্শন মাত্রই জীবনদর্শন। গোবিন্দ চন্দ্র সকল অন্ধতা, অজ্ঞানতা, কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে ন্যায় ও বিজ্ঞানভিত্তিক নব নৈতিক আদর্শের কথা চিন্তা করেছেন।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা

  • নীতি শাস্ত্রকে ইংরেজিতে বলা হয়- 'Ethics".
  • Morals of morality এর মূল উৎস ল্যাটিন mas শব্দটি।
  • 'নীতিভ্রষ্ট বা নীতিহীন শাসক হলো অন্যতম পাপী' বলেছেন- করমচাঁদ গান্ধী ।
  • আইন ও নৈতিকতার মধ্যে প্রথম পার্থক্য করেন- ম্যাকিয়াভেলি।
  • আইনের প্রয়োগ হয় না- নৈতিকতা লঙ্ঘনে।
  • নৈতিকতার রক্ষাকবচ- বিবেকের দংশন।
  • ভাল মন্দ বিচার করার ক্ষমতাকে বলে- নৈতিকতা।
  • বিবেক, চিন্তা বুদ্ধি ও ন্যায়পরায়ণতা হচ্ছে- নৈতিকতার উৎস।।
  • মূল্যবোধ দৃঢ় হয়- শিক্ষার মাধ্যমে।
  • মানুষ ও পশুর মধ্যে পার্থক্যকারী ধারণা- ঔচিত্যবোধ।
  • কথা-বার্তা, আচার-আচরণে- নীতি অনুসরণ করাকে বলে-নৈতিকতা।
  • নৈতিকতার আরেক নাম- মূল্যবোধ।
  • নৈতিকতা বিকাশের লালনক্ষেত্র- সমাজ।
  • নৈতিকতার উৎস নয়- অপরাধ ।
  • নৈতিকতার বিধান- ঐচ্ছিক।
  • ব্যক্তির নিজস্ব সিদ্ধান্ত ও পছন্দ থেকে উদ্ভূত-নৈতিকতা।
  • কাঠামোবদ্ধ রূপ অনুপস্থিত- নৈতিকতায়।
  • নৈতিকতা- অভ্যাস ও চর্চার ব্যাপার।
  • নৈতিকতার ধারণা- সর্বজনীন।
  • নৈতিকতার মানকে আদর্শ করে- উপযুক্ত শিক্ষা।
  • যে অধিকার লঙ্ঘিত হলে রাষ্ট্রীয় শাস্তির বিধান নেই- নৈতিক অধিকার।
  • দেশ প্রেমের সূতীকাগার বলা হয়- আত্মসংযমকে।
  • সমাজ কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য উপাদান- নৈতিকতা।
  • সমাজের প্রথা, আদর্শ, ধর্ম ও ন্যায়বোধ হতে জন্ম- নৈতিকতার।
  • নৈতিকতা ও নীতিবোধের বিকাশ ঘটায়- ভাল-মন্দ, ন্যায়- অন্যায়, উচিত- অনুচিত বোধ।
  • নৈতিকতা একটি মানসিক বিষয়।
  • ব্যক্তিগত ও সামাজিক ব্যাপার- নৈতিকতা।
  • নৈতিকতাহীনতা- দণ্ডনীয় অপরাধ নয়।
  • নৈতিকতা হলো- অনির্দিষ্ট ও অস্পষ্ট।
  • মানুষের মনোজগতকে নিয়ন্ত্রণ করে- নৈতিকতা।
  • নৈতিকতার পরিধি- আইনের চেয়ে বড়।
  • আইন ও নৈতিকতার লক্ষ্য ও আলোচ্য বিষয়- একই।
  • নৈতিকতা ভিন্ন হতে পারে- দেশ-কাল-পাত্র ভেদে।
  • বুদ্ধিমান ও ভদ্র মানুষ তৈরিতে সহায়তা করে- নীতি ও ঔচিত্যবোধ।
  • নৈতিকতা পরিচালিত হয়- সামাজিক বিবেকের দ্বারা।
  • নৈতিকতা প্রয়োগ করে না- রাষ্ট্র।
  • নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত ও আচরণগত উৎকর্ষতা - শুদ্ধাচার।
  • নৈতিকতার মানকে আদর্শ করে উপর্যুক্ত শিক্ষা।
  • Truth is beauty and beauty is truth- বলেছেন জন কিটস্।
নবীনতর পূর্বতন