দ্বিজেন্দ্রলাল রায়

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩-১৯১৩)

প্রখ্যাত কবি, গীতিকার ও সুরকার এবং বিশেষভাবে নাট্যকার হিসেবে স্বকীয়তার পরিচয় দিয়েছেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। রবীন্দ্র যুগের হয়েও তিনি তাঁর কবিতায় নতুন আঙ্গিক ও ছন্দে এবং ব্যঙ্গ ও হাস্যরসাত্নকভাবে মৌলিকতার পরিচয় দিয়েছেন।

দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (ডি. এল রায়) নদীয়ার কৃষ্ণনগরে ১৯ জুলাই, ১৮৬৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রতিষ্ঠিত সংগঠন তিনি বিখ্যাত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ‘পূর্ণিমা সম্মিলন' (১৯০৫) এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং ‘ইভনিং ক্লাব' নামে অপর একটি সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন।
বিশেষত্ব বাংলা সাহিত্যে প্যারোডি রচনার পথিকৃৎ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। তিনি বাংলা সমবেত কণ্ঠসংগীতের প্রবর্তক। তিনি বাংলা নাটকে সার্থক দ্বন্দ্বমূলক চরিত্র সৃষ্টির প্রথম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ।
প্রথম প্রকাশিত কাব্য দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের প্রথম প্রকাশিত কাব্যের নাম ‘আর্যগাথা’ (১৮৮২): এটি তাঁর ছাত্রাবস্থায় প্রকাশিত হয় ।
কাব্যগ্রন্থ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কাব্যগ্রন্থগুলো:

‘আর্যগাথা’ ( ১ম ভাগ- ১৮৮২, ২য় ভাগ- ১৮৯৩)। Lyrics of Ind. (১৮৮৬): এটি ইংরেজিতে রচিত ।
‘মন্দ্ৰ’ (১৯০২), ‘আলেখ্য' (১৯০৭), ‘ত্রিবেণী' (১৯১২)।
ব্যঙ্গকবিতা: ‘আষাঢ়ে’ (১৮৯৯), ‘হাসির গান' (১৯০০)।
নাটক ডি এল রায়ের নাটকগুলো:

ঐতিহাসিক নাটক:
‘সাজাহান' (১৯০৯): সম্রাট শাজাহানের ওপর রচিত প্রথম নাটক। তিনিই প্রথম শাহজাহানকে নিয়ে নাটক লেখেন। ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা'- গানটি এ নাটকের। এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ঐতিহাসিক নাটক।
‘চন্দ্রগুপ্ত' (১৯১১): গ্রিক ও ভারতীয় সম্পর্কের একটি বিশেষ মুহূর্তই এ নাটকের পটভূমি ।
'প্রতাপসিংহ' (১৯০৫), 'দুর্গাদাস' (১৯০৬), 'নূরজাহান' (১৯০৮), ‘মেবারপতন' (১৯০৮), ‘তারাবাঈ' (১৯০৩), ‘সিংহল বিজয়' (১৯১৬). ‘তাপসী’।

রোমান্টিক ও পৌরাণিক নাটক:
'সীতা'(১৯০২), ‘ভীষ্ম’ (১৯১৪), ‘সোহরাব-রুস্তম'(১৯০৮)।

কাব্যনাট্য :
‘পাষাণী' (১৯০০)।

সামাজিক নাটক :
‘পরপারে’ (১৯১২), ‘বঙ্গনারী' (১৯১৬)।

নকশা ও প্রহসন :
‘কল্কি অবতার' (১৮৯৫), ‘বিরহ’ (১৮৯৭), ‘একঘরে' (১৮৯৯), ‘ত্র্যহস্পর্শ' (১৯০০), ‘প্রায়শ্চিত্ত' (১৯০২), ‘পূনর্জন্ম' (১৯১১), ‘আনন্দ বিদায়'(১৯১২)।
‘সাজাহান’ নাটক মোঘল সম্রাট সাজাহানের জীবন কাহিনি অবলম্বনে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় সর্বপ্রথম রচনা করেন ঐতিহাসিক নাটক ‘সাজাহান' (১৯০৯)। বাংলা নাট্যজগতের অন্যতম মঞ্চসফল নাটক ‘সাজাহান'। নায়কের করুণ জীবনকাহিনি নাটকটিকে জনপ্রিয় করেছে। সংলাপের আড়ম্বর, বাকশৈলীর বর্ণাঢ্যতা, আবেগের প্রচণ্ডতা ও ঘটনার অতি নাটকীয়তা এ নাটকের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
মৃত্যু তিনি ১৭ মে, ১৯১৩ সালে মারা যান।
নবীনতর পূর্বতন