সুকান্ত ভট্টাচার্য

সুকান্ত ভট্টাচার্য (১৯২৬-১৯৪৭)

কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা যেন জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড যা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিকামী বাঙালির মনে বিশেষ শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে। তাঁর কাব্যে অন্যায়-অবিচার, শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, বিপ্লব ও মুক্তির আহবান প্রাধান্য পেয়েছে ।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম ১৫ আগস্ট, ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে (বাংলা- ৩০ শ্রাবণ, ১৩৩৩) কলকাতার মহিম হালদার স্ট্রিট, কালীঘাটে (মাতুলালয়) জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার উনশিয়া গ্রামে ।
উপাধি তিনি বামপন্থি মার্কসবাদী বিপ্লবী কবি হিসেবে খ্যাত হলেও ‘কিশোর কবি' হিসেবে পরিচিত।
সম্পাদনা তিনি ছিলেন দৈনিক পত্রিকা ‘স্বাধীনতা'র কিশোর সভা অংশের প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক।
কাব্যগ্রন্থ তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থসমূহের নাম:

ছাড়পত্র ' (১৯৪৭): এটি কবির মৃত্যুর তিনমাস পরে প্রকাশিত হয়। এ কাব্যের অন্যতম কবিতা ‘ছাড়পত্র’ ও ‘আঠারো বছর বয়স’। শোষিত মানুষের জীবন-যন্ত্রনা, বিক্ষোভ ও বিদ্রোহ, অনাচার ও বৈষম্যের প্রতিবাদ এ কাব্যের প্রধান বিষয়বস্তু।

‘ঘুম নেই' (১৯৫০),
'পূর্বাভাস' (১৯৫০),
“মিঠেকড়া’ (১৯৫১),
‘অভিযান’ (১৯৫৩),
‘হরতাল' (১৯৬২),
‘গীতিগুচ্ছ’ (১৯৬৫)।
সাহিত্য সংকলন সম্পাদনা আকাল’ (১৯৪৩) : পঞ্চাশের মন্বন্তর এ সংকলনের কবিতাগুলোর মূল প্রেরণা। ১৯৬৬ সালে সুভাস মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকাসহ এর নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এটি ছিল জীবিত অবস্থায় প্রকাশিত তাঁর একমাত্র গ্রন্থ ।
বিখ্যাত কবিতা ‘আঠারো বছর বয়স' । কবিতাটি ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ পঙক্তি ১. “ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়,
পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।” (মহাজীবন)

২. 'কবি সে, ছবি আঁকার অভ্যাস ছিল না ছোট বয়সে,
অথচ শিল্পি বলে সে-ই পেল শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের সম্মান।' (এক যে ছিল)

৩. 'বন্ধু তোমার ছাড় উদ্বেগ, সুতীক্ষ্ণ কর চিত্ত,
বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি বুঝে নিক দুর্বৃত্ত' । (উদ্যোগ)

৪. ‘এই বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি,
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার'। (ছাড়পত্র)

৫. ‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত ধ্বংসস্তূপ-পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের'। (ছাড়পত্র)

৬. ‘অবাক পৃথিবী অবাক করলে তুমি,
জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশ ভূমি' ।
মৃত্যু তিনি ১৪ মে, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে (বাংলা- ২৯ বৈশাখ, ১৩৫৪) যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে যাদবপুর টিবি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। (তিনি মাত্র ২০ বছর ৯ মাস জীবিত ছিলেন) ।
নবীনতর পূর্বতন