আল মাহমুদ (১৯৩৬-২০১৯)
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ। প্রথম পর্যায়ে তিনি গ্রামবাংলার গণমানুষের প্রবহমান জীবনধারা ও তার পটভূমি থেকে কাব্য রচনার উপাদান সংগ্রহ করেন, পরবর্তীতে তাঁর কবিতায় শহুরে জীবনের ছায়াপাত ঘটে। তিনি কবিতায় বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্য ও লোকশব্দ ব্যবহারে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি জাসদ (জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল) প্রতিষ্ঠিত ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’ প্রকাশিত হলে তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হন। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন সরকারের নির্দেশে এ পত্রিকা বন্ধ করা হয় এবং সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয় । জেলে থাকাকালে তিনি মার্কসবাদী আদর্শকে পরিত্যাগ করে ইসলামি আদর্শ গ্রহণ করেন ।
সাহিত্যিক উপাদান
|
সাহিত্যিক তথ্য
|
জন্ম
|
আল মাহমুদ ১১ জুলাই, ১৯৩৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।
|
প্রকৃত নাম
|
তাঁর প্রকৃত নাম মির আব্দুস শুকুর আল মাহমুদ ।
|
শিক্ষাগত যোগ্যতা
|
তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা- মাধ্যমিক পাস ।
|
পেশা
|
বঙ্গবন্ধুর সুপারিশে তিনি শিল্পকলা একাডেমির অফিসার পদে যোগদান করেন এবং ১৯৯৩ সালে পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। অবসর গ্রহণের পর চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক কর্ণফুলি' পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন ।
|
পুরস্কার
|
তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮), একুশে পদক (১৯৮৭) পান ।
|
কাব্যগ্রন্থ
|
তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলো :
‘লোক লোকান্তর' (১৯৬৩): এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ।
‘সোনালী কাবিন' (১৯৭৩): এটির প্রথমে নাম ছিলো ‘অবগাহনের শব্দ’। পরে তিনি এটির নামকরণ করেন ‘সোনালী কাবিন’। গ্রামীণ আবহে রচিত ৪৪টি কবিতার সংকলনে এ কাব্যগ্রন্থে তাঁর কবি প্রতিভা নিশ্চিত হয়েছে। এতে প্রকাশ পেয়েছে বঞ্চিতের ক্ষোভ, শ্রমিকের ঘাম, এ কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ ‘গোল্ডেন কাবিন' নামে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হয়।
‘কালের কলস’ (১৯৬৬),
‘মায়াবী পর্দা দুলে উঠো' (১৯৬৯),
‘অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না' (১৯৮০),
‘পাখির কাছে ফুলের কাছে' (১৯৮০),
‘বখতিয়ারের ঘোড়া’ (১৯৮৪),
‘দোয়েল ও দয়িতা' (১৯৯৭),
‘প্রেমের কবিতা' (২০০২),
‘দ্বিতীয় ভাঙ্গন’ (২০০২)।
|
উপন্যাস
|
তাঁর রচিত উপন্যাসগুলো:
‘ডাহুকী’ (১৯৯২),
'কবি ও কোলাহল ’ (১৯৯৩),
‘উপমহাদেশ’ (১৯৯৩),
‘আগুনের মেয়ে' (১৯৯৫),
‘চেহারার চতুরঙ্গ’ (২০০০),
‘কাবিলের বোন' (২০০১)।
|
গল্পগ্রন্থ
|
তাঁর গল্পগ্রন্থসমূহ:
‘পানকৌড়ির রক্ত’ (১৯৭৫),
‘সৌরভের কাছে পরাজিত' (১৯৮৩),
‘গন্ধবণিক’ (১৯৮৬),
‘ময়ূরীর মুখ' (১৯৯৪)।
|
বিখ্যাত পঙক্তি
|
“আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে গেল শেষে
হেথায় খুঁজি হোথায় খুঁজি সারা বাংলাদেশে।” (নোলক)
|
মৃত্যু
|
তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সালে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শুক্রবার রাত ১১:০৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেন।
|
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন