কাজী ইমদাদুল হক

কাজী ইমদাদুল হক (১৮৮২-১৯২৬)

ব্রিটিশ ভারতের একজন বাঙালি লেখক ও শিক্ষাবিদ কাজী ইমদাদুল হক বাংলার মুসলিম সমাজের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে সাহিত্যকর্মে নিয়োজিত হন। তিনি ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা' (১৯১৮) প্রকাশনা কমিটির সভাপতি ছিলেন।

কাজী ইমদাদুল হকের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম কাজী ইমদাদুল হক ৪ নভেম্বর, ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে খুলনার গদাইপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।
সম্পাদনা তিনি ‘শিক্ষক’ (১৯২০) পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। এটি তিন বছর চালু ছিলো ।
স্থপতি তিনি ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি'র (১৯১১) স্থপতি ছিলেন।
ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ১৯২১ সালের মে মাসে ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড স্থাপিত হলে তিনি এর সেক্রেটারি পদে যোগদান করেন ।
উপাধি অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সততার সহিত শিক্ষা বিভাগের দায়িত্ব পালন করায় সরকার তাঁকে ‘খান সাহেব' (১৯১৯) ও ‘খান বাহাদুর' (১৯২৬) উপাধিতে ভূষিত করেন।
সাহিত্যকর্ম ইমদাদুল হকের সাহিত্যকর্মসমূহ:

উপন্যাস : ‘আবদুল্লাহ' (১৯৩৩)।

কাব্য: ‘আঁখিজল' (১৯০০), ‘লতিকা’(১৯০৩-এটি অপ্রকাশিত)।

প্রবন্ধ: ‘মোসলেম জগতে বিজ্ঞান চর্চা' (১৯০৪), ‘ভূগোল শিক্ষা প্রণালী' (১৯১৩), ‘প্রবন্ধমালা' (১৯১৮)।

শিশুতোষ গ্রন্থ : ‘নবীকাহিনী' (১৯১৭), ‘কামারের কাণ্ড’ (১৯১৯)।
মৃত্যু তিনি ২০ মার্চ, ১৯২৬ সালে কিডনী রোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মারা যান। কলকাতার গোরা কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

‘আবদুল্লাহ' উপন্যাসের পরিচয়

মুসলিম সমাজের কাহিনি অবলম্বনে কাজী ইমদাদুল হক রচিত বিখ্যাত উপন্যাস ‘আবদুল্লাহ (১৯৩৩)। উপন্যাসটি প্রথমে ‘মোসলেম ভারত' পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। তৎকালীন কুসংস্কারাচ্ছন্ন মুসলিম সমাজ ব্যবস্থার চিত্রাঙ্কনই এ উপন্যাসের উপজীব্য। মুসলমান সমাজের ক্ষয়িষ্ণু আদর্শ ও রীতিনীতির বিপরীতে স্বাধীনচেতা ও প্রগতিশীল শিক্ষিত মনের নব্যসমাজ প্রতিষ্ঠার বাসনাই এ উপন্যাসে ঔপন্যাসিক প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যক্ত করার প্রয়াস পেয়েছেন। পীরবাদ, আভিজাত্যবাদ, পর্দাপ্রথা ইত্যাদির বিরুদ্ধে ঔপন্যাসিকের আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্ফুটিত হয়েছে। আব্দুল্লাহ আধুনিক শিক্ষিত ধর্মপ্রাণ মুসলমান কিন্তু কুসংস্কার বিরোধী। তার মতে, পীর মুরিদ হলো হিন্দুদের পুরোহিতদের অনুকরণ, ইসলামে এর কোনো স্থান নেই। এ উপন্যাসটি কাজী ইমদাদুল হক শেষ করে যেতে পারেননি। তিনি মোট ৩০টি অধ্যায় সমাপ্ত করে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১১টি অধ্যায়ের খসড়া রেখে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর ১১টি পরিচ্ছেদ সম্পাদনার মাধ্যমে এর সমাপ্তি টানেন কাজী আনোয়ারুল কাদির। চরিত্র: আবদুল্লাহ, সালেহা, আবদুল কাদের, মীর সাহেব ।

নবীনতর পূর্বতন