শওকত আলী

শওকত আলী (১৯৩৬-২০১৮)

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক শওকত আলী বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে গল্প ও উপন্যাস লিখে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রাই হচ্ছে তাঁর উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু। বাংলাদেশের আঞ্চলিক জীবনের অন্ত্যজ শ্রেণির জীবনচিত্র অঙ্কনে তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ।

শওকত আলীর সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম শওকত আলী ১২ জানুয়ারি, ১৯৩৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রথম লেখা ছাত্রজীবনে তাঁর প্রথম লেখা গল্প কলকাতার ‘নতুন সাহিত্য’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
পেশা ১৯৯৩ সালে সরকারি সংগীত কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
পুরস্কার তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮), ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬- ত্রয়ী উপন্যাসের জন্য), একুশে পদক (১৯৯০) পান।
উপন্যাস শওকত আলীর উপন্যাসসমূহ:

‘পিঙ্গল আকাশ' (১৯৬৩): এ উপন্যাসে নারীহৃদয়ের আশা- আকাঙ্ক্ষার ও ব্যর্থতার পরিচয় ফুটে উঠেছে।

‘যাত্রা” (১৯৭৬): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস। কেন্দ্রীয় চরিত্র: অধ্যাপক রায়হান ।

‘প্রদোষে প্রাকৃতজন' (১৯৮৪): সেন রাজাদের রাজত্বকাল এবং তুর্কি আক্রমণের সমকালীন পটভূমিতে এর কাহিনি বিস্তৃত। অত্যাচারী সামন্তবর্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে অন্ত্যজ হিন্দু ও বৌদ্ধদের দল। সামাজিক বৈষম্য, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন বিশেষ করে আর্য ও অনার্য মানুষের মধ্যে পারস্পরিক অসাম্য এ উপন্যাসের বিষয়।

‘কুলায় কালস্রোত' (১৯৮৬): রাখী নামের শিক্ষিত একজন নারীর ব্যক্তিজীবন রাজনৈতিক টানাপোড়েন ক্ষত-বিক্ষত হয়। শেষ পর্যন্ত মুক্তির উদ্দেশ্যে সে ঢাকা ছেড়ে মফস্বল শহর ঠাকুরগাঁও- এর দিকে যাত্রা করে। মূলত এটি ১৯৬৫- ৬৯ সালের সময়কার উত্তাল রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে ব্যক্তিজীবন বিপর্যয়ের উপাখ্যান।

ওয়ারিশ ' (১৯৮৯): মানব সভ্যতার ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ রঞ্জু চরিত্রের মাধ্যমে লেখক প্রকাশ করেছেন।

‘উত্তরের খেপ' (১৯৯২): ট্রাক ড্রাইভার বাবা ও বিহারী মায়ের সন্তান হায়দারের সাথে বিয়ে হয় বড়লোকের নাতনি মরিয়মের। এর কিছুদিন পরেই আবার মরিয়মের বিয়ে হয় কুচক্রীর সাথে। তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আগমন ঘটে মিঠুর, কাহিনি মোড় নেয় ভিন্ন দিকে। আমাদের গ্রামীণ বাস্তবতার উজ্জ্বল রূপ এ উপন্যাস।

‘দক্ষিণায়নের দিন' (১৯৮৫),

'পূর্বরাত্রি পূর্বদিন' (১৯৮৬),

‘যেতে চাই' (১৯৮৮),

‘বাসর মধুচন্দ্রিমা' (১৯৯০),

‘হিসাব-নিকাশ’ (১৯৯৮),

' দলিল ' (২০০১),

‘উত্তরের ছাপ’ (২০০২),

বসত',

'স্থায়ী ঠিকানা' ,

'কোথায় আমার ঘরবাড়ি’ ,

ত্রিপদী ’,

‘দুই রকম’,

পতন ’,

‘ভিতরগড়ের তিন মূর্তি' (কিশোর উপন্যাস)
গল্পসমূহ শওকত আলীর গল্পসমূহ:

‘উন্মুল বাসনা’ (১৯৬৮),

‘লেলিহান স্বাদ’ (১৯৭৮),

‘শুন হে লক্ষিন্দর' (১৯৮৮),

‘বাবা আপনে যান’ (১৯৯৪)।
ত্রয়ী উপন্যাস শওকত আলীর ত্রয়ী উপন্যাস যথা : ‘দক্ষিণায়নের দিন’, ‘কুলায় কালস্রোত’, ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন'
মৃত্যু তিনি ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ সালে বৃহস্পতিবার ৮:১৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
নবীনতর পূর্বতন