হুমায়ুন আজাদ (১৯৪৭-২০০৪)
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ ছিলেন প্রথাবিরোধী লেখক। ধর্মীয় মৌলবাদীদের মুখোশ উম্মোচন, লৈঙ্গিক বৈষম্যে বিশ্বাসহীন, রাজনৈতিক অসাম্যের প্রতি শ্লেষ এবং সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য আশির দশক থেকে পাঠকগোষ্ঠীর ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
হুমায়ুন আজাদের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
---|---|
জন্ম | হুমায়ুন আজাদ ২৮ এপ্রিল, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে বিক্রমপুরের রাঢ়িখালে জন্মগ্রহণ করেন । |
পিতৃপ্রদত্ত নাম | পিতৃপ্রদত্ত নাম হুমায়ুন কবির । ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮ সালে নাম পরিবর্তন করে হুমায়ুন আজাদ নাম গ্রহণ করেন। |
পেশা | তিনি আমৃত্যু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার অধ্যাপক ছিলেন। |
পুরস্কার | তিনি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৮৬), ‘একুশে পদক' (২০১২, মরণোত্তর) লাভ করেন। |
জার্মানী গমন | ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঘাতকদের হামলার শিকার হন। সুস্থ হয়ে ৭ আগস্ট, ২০০৪ সালে বিখ্যাত কবি হাইনরিশ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানী গমন করেন। |
কাব্যগ্রন্থ |
তাঁর কাব্যগ্রন্থসমূহ: ‘অলৌকিক ইস্টিমার' (১৯৭৩): এটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্য। তিনি এটি ১৯৬৮-৭২ এর প্রতিটি রাতদিনগুলোর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন । ‘সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে' (১৯৮৫): তিনি কাব্যটি হুমায়ূন আহমেদ ও ইমদাদুল হক মিলনকে উৎসর্গ করেন । ‘কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু' (১৯৯৮): তিনি কাব্যটি তাঁর ‘প্রিয় মৃতদের জন্য' উৎসর্গ করেন । ‘জ্বলো চিতাবাঘ’ (১৯৮০), ‘যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল' (১৯৮৭), ‘আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে’ (১৯৯০), ‘পেরোনোর কিছু নেই' (২০০৪)। |
উপন্যাস | তাঁর উপন্যাসসমূহ: ‘আব্বুকে মনে পড়ে' (১৯৮৯): এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিশোর উপন্যাস। এ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ১৯৭১ সালের চার বছরের এক শিশু। যার মানসপটে বার বার ভেসে ওঠে যুদ্ধ করতে যাওয়া তার বাবার স্মৃতি । ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ' (২০০৪) : বাংলাদেশে যখন মৌলবাদের থাবা ভয়ানকভাবে বিস্তার করে, তখন তিনি এটি রচনা করেন । এ গ্রন্থে লেখক ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারী রাজনৈতিক দল ‘জামায়াতে ইসলামী'কে ফ্যাসিবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে এর কঠোর সমালোচনা করেন। ‘ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল' (১৯৯৪), ‘সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে' (১৯৯৫), ‘মানুষ হিসেবে আমার অপরাধসমূহ' (১৯৯৬), ‘যাদুকরের মৃত্যু' (১৯৯৬), ‘রাজনীতিবিদগণ' (১৯৯৮), ‘কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ' (১৯৯৯), ‘নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু' (২০০০), 'ফালি ফালি করে কাটা চাঁদ' (২০০১), ‘শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা' (২০০২), ‘১০,০০০ এবং আরো একটি ধর্ষণ' (২০০৩), ‘একটি খুনের স্বপ্ন' (২০০৪) |
অন্যান্য রচনাবলি | তাঁর অন্যান্য রচনাবলি: সমালোচনা প্রবন্ধ: ‘নারী’ (১৯৯২) : এটি বহুল আলোচিত-সমালোচিত নারীবাদী গবেষণামূলক গ্রন্থ। ১৯৯৫-২০০০ সাল পর্যন্ত এটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিলো। ‘নিবিড় নীলিমা’ (১৯৯২), ‘মাতাল তরণী’ (১৯৯২), ‘নরকে অনন্ত ঋতু' (১৯৯২), জলপাই রঙের অন্ধকার' (১৯৯২), ‘রবীন্দ্রপ্রবন্ধ : রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তা (১৯৯৩), “শামসুর রাহমান : নিঃসঙ্গ শেরপা’ (১৯৯৩), ‘সীমাবদ্ধতার সূত্র’ (১৯৯৩), ‘আধার ও আধেয়’ (১৯৯৩), ‘আমার অবিশ্বাস' (১৯৯৭), ‘মহাবিশ্ব’ (২০০০), ‘দ্বিতীয় লিঙ্গ' (২০০১, মূল: সিমোন দ্য বোভোয়ার), ‘আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম' (২০০৩) । কিশোর সাহিত্য: ‘লাল নীল দীপাবলি বা বাঙলা সাহিত্যের জীবনী' (১৯৭৬), ‘ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না' (১৯৮৫), ‘কতো নদী সরোবর বা বাঙলা ভাষার আত্মজীবনী' (১৯৮৭), ‘আব্বুকে মনে পড়ে' (১৯৮৯), ‘বুক পকেটে জোনাকি পোকা' (১৯৯৩), ‘আমাদের শহরে একদল দেবদূত' (১৯৯৬), গন্ধরাজ (২০০৩), ‘Our Beautiful Bangladesh' (২০০৪)। ভাষাতত্ত্ব: ‘Pronominalization in Bengali' (১৯৮৩), ‘বাঙলা ভাষার শত্রুমিত্র' (১৯৮৩), ‘বাক্যতত্ত্ব' (১৯৮৪), ‘বাংলা ভাষা' (প্রথম খণ্ড-১৯৮৪, দ্বিতীয় খণ্ড-১৯৮৫), ‘তুলনামূলক ও ঐতিহাসিক ভাষা বিজ্ঞান' (১৯৮৮), ‘অর্থবিজ্ঞান’ (১৯৯৯)। |
অন্যান্য সাহিত্যকর্ম | অন্যান্য সাহিত্যকর্ম: সাক্ষাৎকার (১৯৯৪), আততায়ীদের সঙ্গে কথোপকথন (১৯৯৫), বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময় (১৯৯৭) |
মৃত্যু | তিনি ১১ আগস্ট, ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির মিউনিখে মৃত্যুবরণ করেন। ১২ আগস্ট তার রুম থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। |
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নসমূহ পড়তে ও পরীক্ষা দিতে এখানে ক্লিক করুন