হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৯০৩)
মাইকেল মধুসূদন দত্তের পরবর্তীকালে সর্বাধিক খ্যাতিমান কবি ছিলেন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মহাকাব্যের মধ্য দিয়ে তৎকালীন ইংরেজ শাসিত ভারতীয়দের, বিশেষত বাঙালি শিক্ষিত মহলে স্বদেশপ্রেমের উত্তেজনা সৃষ্টি করেন ।
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্ম
সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
---|---|
জন্ম | হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৭ এপ্রিল, ১৮৩৮ সালে হুগলি জেলার গুলিটা রাজবল্লভহাট গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন । পৈতৃক নিবাস- হুগলীর উত্তর পাড়া। |
মহাকাব্য | ‘বৃত্রসংহার’ (১৮৭৫-৭৭): হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত দুই খণ্ডে বিভক্ত জনপ্রিয় আখ্যানকাব্য ‘বৃত্রসংহার' (১ম খণ্ড- ১৮৭৫, ২য় খণ্ড- ১৮৭৭), যা মহাকাব্য হিসেবে পরিচিত। দুই খন্ডে রচিত মহাকাব্য জাতীয় রচনা “বৃত্রসংহার” তাঁকে এনে দিয়েছে সমধিক খ্যাতি। হিন্দু জাতীয়তাবোধ প্রকাশের লক্ষ্যে হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে তিনি এ মহাকাব্য রচনা করেন। বৃত্র নামক অসুর কর্তৃক স্বর্গবিজয় এবং দেবরাজ ইন্দ্র কর্তৃক স্বর্গের অধিকার পুনঃস্থাপন ও বৃত্রাসুরের নিধন এ মহাকাব্যের মূল বিষয়। |
কাব্যগ্রন্থ | হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাব্যগ্রন্থসমূহ: ‘চিন্তাতরঙ্গিণী' (১৮৬১): এটি তাঁর রচিত প্রথম কাব্য। এ কাব্য প্রতিবেশী এক বন্ধুর আত্মহত্যার ঘটনা অবলম্বনে রচিত। ‘নলিনীবসন্ত' (১৮৬৪): এটি শেক্সপিয়রের The Tempest অবলম্বনে রচিত । ‘দশমহাবিদ্যা' (১৮৮২): এটি দান্তের The Divine Comedy অনুসারে রচিত। ‘বীরবাহু’ (১৮৬৪), ‘কবিতাবলী' (১৮৭০- এটি খণ্ড কবিতার সংকলন), ‘আশাকানন’ (১৮৭৬), ‘ছায়াময়ী’ (১৮৮০), ‘চিত্তবিকাশ' (১৮৯৮) । বৃত্রসংহার ( ১ম খন্ড-১৮৭৫ , ২য় খন্ড-১৮৭৭ ) |
খন্ড কবিতা | জীবন সঙ্গীত (এটি লংফেলো এর বঙ্গানুবাদ), ভারত সঙ্গীত, ভারতবিলাপ,গঙ্গার উৎপত্তি, পদ্মের মৃণাল, ভারত-কাহিনী,অশোকতরু, কুলীন কন্যাগণের আক্ষেপ ইত্যাদি খন্ড কবিতা তাঁর অভূতপূর্ব সৃষ্টি। |
মৃত্যু | জীবন সায়াহ্নে তিনি অন্ধ হয়ে যান এবং চরম দারিদ্র্যের মুখে পতিত হয়ে ২৪ মে, ১৯০৩ সালে কলকাতার খিদিরপুরে মারা যান । |