আলাউদ্দিন আল আজাদ

আলাউদ্দিন আল আজাদ (১৯৩২-২০০৯)

পঞ্চাশের দশকের প্রখ্যাত কবি, ঔপন্যাসিক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল অধ্যাপক আলাউদ্দিন আল আজাদ। তার উপন্যাসে মানুষের জীবনের আশা, সঙ্কট, আনন্দ ও বেদনা পরিস্ফুট হয়েছে। তাঁর কবিতায় মার্কসবাদী চেতনার কথা থাকলেও এতে রোমান্টিক আবেগ অক্ষুণ্ণ থেকেছে। নগরজীবনের কৃত্রিমতা, রাজনীতির সংগ্রাম, নিপীড়ন, প্রতারণা তিনি তাঁর কথাসাহিত্যের বিষয়বস্তু করেছেন। তিনি এরশাদ সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা ছিলেন ।

আলাউদ্দিন আল আজাদের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম আলাউদ্দিন আল আজাদ ৬ মে, ১৯৩২ সালে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রকৃত ও ডাকনাম তাঁর প্রকৃত নাম আলাউদ্দিন, ডাকনাম- বাদশা
ভাষা আন্দোলন তিনি ভাষা আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁর উদ্যোগেই প্রথম প্রকাশিত হয় ‘একুশের প্রথম বুলেটিন'
পুরস্কার তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' (১৯৭৭), একুশে পদক (১৯৮৬) লাভ করেন ।
গল্পগ্রন্থ তাঁর গল্পগ্রন্থসমূহ:

‘জেগে আছি’ (১৯৫০): এটি তাঁর প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ ।

‘ধানকন্যা’ (১৯৫১),

‘অন্ধকার সিঁড়ি' (১৯৫৩),

‘মৃগনাভি’ (১৯৫৩),

‘উজান তরঙ্গে' (১৯৬৩),

‘যখন সৈকত’ (১৯৬৭),

‘আমার রক্ত স্বপ্ন আমার' (১৯৭৫),

‘জীবনজমিন’ (১৯৮৮)।
উপন্যাস তাঁর উপন্যাসসমূহ:

‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র' (১৯৬০) : এটি মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণমূলক উপন্যাস। মাতৃত্বের গভীর ও আবেগী প্রকাশ এবং সাংসারিক জীবনের আকুতি এ উপন্যাসের বিষয়। এটি ‘বসুন্ধরা’ নামে চলচ্চিত্রায়িত করেন সুভাষ দত্ত যা ১৯৭৭ সালে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার' লাভ করে। এটি বুলগেরীয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে ‘পোত্রেৎ‍ দুবাতসাৎ ত্ৰি' নামে।

‘কর্ণফুলী' (১৯৬২): এটি পাহাড়-সমুদ্রঘেরা উপজাতীদের জীবনচিত্র নিয়ে রচিত। আদিবাসী তরুণী রাঙ্গামিলার প্রণয়ে আকৃষ্ট হয় চোরাকারবারি, উচ্চাভিলাসী বাঙালি ইসমাইল। প্রেমিক দেওয়ান পুত্র, জলি, রমজানদের জীবন-যাপন, প্রণয় ইত্যাদি এ উপন্যাসের মূল বিষয়।

‘ক্ষুধা ও আশা' (১৯৬৪): এতে রূপায়িত হয়েছে যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষপীড়িত সামাজিক অবস্থায় সংগ্রামী মানুষের চিত্র।

‘শীতের শেষ রাত বসন্তের প্রথম দিন' (১৯৬২),

'খসড়া কাগজ' (১৯৮৬),

‘শ্যামল ছায়ার সংবাদ' (১৯৮৬),

‘জ্যোৎস্নার অজানা জীবন' (১৯৮৬),

‘যেখানে দাঁড়িয়ে আছি' (১৯৮৬),

‘স্বাগতম ভালোবাসা' (১৯৯০),

‘অপর যোদ্ধারা’ (১৯৯২),

‘পুরানা পল্টন' (১৯৯২),

‘অন্তরীক্ষে বৃক্ষরাজী' (১৯৯২),

‘স্বপ্নশিলা’ (১৯৯২),

‘ক্যাম্পাস' (১৯৯৪),

‘প্রিয় প্রিন্স' (১৯৯৫),

‘কালো জ্যোৎস্নায় চন্দ্রমল্লিকা' (১৯৯৬),

‘বিশৃঙ্খলা’ (১৯৯৭)।
কাব্যগ্রন্থ মানচিত্র' (১৯৬১): এ কাব্যের বিখ্যাত কবিতা ‘ স্মৃতিস্তম্ভ' (স্মৃতির মিনার ভেঙ্গেছে তোমার / ভয় কি বন্ধু), যা ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সালে পাকিস্তানি পুলিশ কর্তৃক শহিদ মিনার ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে তিনি রচনা করেন ।

‘ভোরের নদীর মোহনায় জাগরণ' (১৯৬২),

‘লেলিহান পাণ্ডুলিপি' (১৯৭৫),

‘সাজঘর' (১৯৯০),

‘চোখ' (১৯৯৬)।
নাটক ‘মরক্কোর জাদুঘর' (১৯৫৯),

‘মায়াবী প্রহরা' (১৯৬৩),

ধন্যবাদ ' (১৯৬৫),

‘নিঃশব্দ যাত্রা' (১৯৭২),

'নরকে লাল গোলাপ' (১৯৭২),

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক:

‘হিজল কাঠের নৌকা’ (১৯৭৬),

‘সংবাদ শেষাংশ’
প্ৰবন্ধ ‘শিল্পীর সাধনা' (১৯৫৮), ‘ফেরারী ডায়েরী’ (১৯৭৮) - মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ।
কাব্যনাট্য ‘ইহুদির মেয়ে' (১৯৬২), ‘রঙ্গিন মুদ্রারাক্ষস' (১৯৯৪)।
গল্প ‘জমা খরচ’: এ গল্পটি সিলেটের চা বাগানের কুলি- কামিনদের জীবনকাহিনি নিয়ে রচিত ।

‘যখন সৈকত’: এ গল্পে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর সন্দেহ এবং তা থেকে জিঘাংসার সৃষ্টির স্বরূপ বর্ণিত হয়েছে।
মৃত্যু তিনি ৩ জুলাই, ২০০৯ সালে মারা যান
أحدث أقدم