হাসান আজিজুল হক

হাসান আজিজুল হক (১৯৩৯-২০২১)

বাংলাদেশের ছোটগল্পের ধারায় অত্যন্ত শক্তিমান লেখকরূপে স্বীকৃত হাসান আজিজুল হক। বস্তুবাদী চিন্তা-চেতনার আলোকে তিনি সমাজ জীবনের অবক্ষয়, সাম্প্রদায়িকতা, নিম্ন মধ্যবিত্ত জীবনের প্রকৃত রূপ, হতাশা ও দারিদ্র্যের নিখুঁত চিত্র নির্লিপ্ত শিল্পীর মত অঙ্কন করেছেন।

হাসান আজিজুল হকের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম হাসান আজিজুল হক ২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রথম লেখা রাজশাহী কলেজে পড়াকালীন ভাঁজপত্র ‘চারপাতা’য় আমের মাহাত্ম্যবিষয়ক তাঁর প্রথম লেখা ছাপা হয়।
সম্পাদনা তিনি ' অসীমান্তিক ' (১৯৯৮) নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন।
পুরস্কার তিনি ‘বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৭০), ‘আদমজী সাহিত্য পুরস্কার' (১৯৬৭), ‘একুশে পদক’ (১৯৯৯), ‘আনন্দ পুরস্কার' (২০০৭) পান ।
অধ্যাপনা তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন এবং ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদের জন্য মনোনীত হন।
গল্পগ্রন্থ তাঁর প্রকাশিত গল্পগ্রন্থগুলো:

‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ' (১৯৬৭): দেশ বিভাগের ফলে সৃষ্ট ব্যক্তিচরিত্রের নৈতিক স্খলন, সাম্প্রদায়িকতা এবং সংশ্লিষ্ট কারণে সৃষ্ট চরম হতাশা ও দারিদ্র্য, উত্তেজক পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে রচিত হয় ‘আত্মজা ও একটি করবী গাছ' গল্পগ্রন্থ ।

‘নামহীন গোত্রহীন' (১৯৭৫): এ গল্পগ্রন্থের গল্পগুলো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক।

‘আমরা অপেক্ষা করছি' (১৯৮৮): এ গল্পগ্রন্থের গল্পগুলোতে নিম্ন মধ্যবিত্ত জীবনের চিত্র, দারিদ্র্যের কষাঘাতে বিবর্ণ নর- নারীর প্রেমহীনতা, অসুস্থ রাজনীতির কালো থাবায় সন্তানহারা পিতার শোক ইত্যাদি বিষয় ফুটে উঠেছে।

‘সমুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য' (১৯৬৪),

‘জীবন ঘষে আগুন’ (১৯৭৩),

‘পাতালে হাসপাতালে' (১৯৮১),

‘রাঢ়বঙ্গের গল্প’ (১৯৯১),

‘রোদে যাবো' (১৯৯৫),

‘মা মেয়ের সংসার’ (১৯৯৭),

‘বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প' (২০০৭)।
উপন্যাস তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসগুলো:

আগুনপাখি ' (২০০৬): হাসান আজিজুল হকের পৈতৃক নিবাস বর্ধমানের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ওই এলাকার মানুষের সংগ্রামী জীবন এবং বিভেদকামী রাজনীতি ও সাম্প্রদায়িকতার যথাযথ রূপায়ণ 'আগুনপাখি' উপন্যাস। চরিত্র: মেঝ বউ।

‘সাবিত্রী উপাখ্যান' (২০১৩): ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন, ভারতের প্রথম নির্বাচন, ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টি গঠন, জমিদারি ও মহাজনি প্রথা, ব্রাহ্মণধর্মীয় এক নারী ধর্ষণ নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে রচিত এ উপন্যাস।

বৃত্তায়ন’ (১৯৯১),

শিউলি' (২০০৬),

শামুক' (২০১৫)।
অন্যান্য রচনাবলি তাঁর অন্যান্য রচনাবলি:

প্রবন্ধ :

‘কথাসাহিত্যের কথকতা' (১৯৮১),
‘অপ্রকাশের ভার’ (১৯৮৮),
'চিন্তন কণা'।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক :

‘একাত্তর-করতলে ছিন্নমাথা ।

নাটক :

‘চন্দর কোথায়'।

শিশুসাহিত্য :

‘লালঘোড়া আমি' (১৯৮৪),
'ফুটবল থেকে সাবধান' (১৯৯৮)।

আত্মজীবনী :

'ফিরে যাই, ফিরে আসি’,
‘উঁকি দিয়ে দিগন্ত।
মৃত্যু দীর্ঘদিন বিভিন্ন অসুস্থতায় ভোগার পর, ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর, হাসান আজিজুল হক তার রাজশাহীর বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সমাধিস্থ করা হয়।
নবীনতর পূর্বতন