মধুমালতী কাব্যের সংক্ষিপ্ত কাহিনী

মধুমালতী কাব্যের কাহিনী

কঙ্গিরা রাজ্যের রাজা সূর্যভান নিঃসন্তান ছিলেন। বহু দানধর্ম করে রাজদম্পতি পুত্রসন্তান লাভ করেন; তার নাম মনোহর। বিদ্যাশিক্ষা লাভ করে রাজকুমার বড় হলো । জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী-অনুসারে মনোহর পনেরো বছর বয়ঃক্রমকালে প্রেমের কারণে দেশান্তরী হয়। পরীরা ঘুমন্ত অবস্থায় মনোহরকে হরণ করে তাদের রাজকন্যা মধুমালতীর কাছে নিয়ে যায়। মধুমালতীর পিতা বিক্রম অভিরাম মহারস রাজ্যের অধিপতি ছিলেন। মনোহর ও মধুমালতী প্রথম সাক্ষাতে পরস্পরের প্রতি প্রণয়াসক্ত হয়। তারা পরস্পর অঙ্গুরি বিনিময় করে এবং গান্ধর্ববিবাহে আবদ্ধ হয়ে সুরত ভোগ করে। নিদ্রিত অবস্থায় পরীরা মনোহরকে পিতৃরাজ্যে রেখে আসে। মনোহর কামপীড়ায় অধীর হয়ে যোগবেশে মধুমালতীর সন্ধানে নিরুদ্দেশযাত্রা করে। সমুদ্রপথে জাহাজডুবিতে মনোহর নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ অবস্থায় অজানা দ্বীপে উপস্থিত হয়। সেখানে দৈত্য কর্তৃক অপহৃতা রাজকন্যা পায়মার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। পায়মা জটবহরের রাজা ছত্রসেনের কন্যা। মধুমালতী তার সখী। দুজনে পরামর্শ করে কৌশলে দৈত্যকে বধ করে জটবহর রাজ্যে উপস্থিত হয়। অতঃপর পায়মার দৌত্যে মনোহর-মধুমালতীর মিলন হয়। কিন্তু মধুমালতীর মাতা রূপমঞ্জরী কুলকলঙ্কের ভয়ে কন্যাকে রাজ-অন্তঃপুরে রেখে মনোহরকে কঙ্গিরায় প্রেরণ করেন। তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ আনেন। রূপমঞ্জরী প্রেমাতুরা মধুমালতীকে শুকপাখিতে রূপান্তরিত করেন। পাখিরূপিনী মধুমালতী উড়ে গিয়ে মাণিক্যরসের রাজা তারাচাঁদের হাতে ধরা পড়ে। তারাচাঁদ দয়াপরবশ হয়ে তাকে পিতৃরাজ্যে নিয়ে যায়; মা তাকে পুনরায় মানবীরূপ দান করেন। অতঃপর পায়মার সাহায্যে মনোহর-মধুমালতীর বিবাহ ও মিলন হয়। তারাচাঁদের সাথে পায়মারও বিবাহ হয়। মনোহর ও মধুমালতী কঙ্গিরায় উপস্থিত হলে পিতামাতা তাদের বরণ করে নেয়। রাজ্যে আনন্দের জোয়ার ওঠে।

নবীনতর পূর্বতন