দ্রবণ

দ্রাব্য, দ্রাবক ও দ্রবণের মধ্যে পার্থক্য: যে কঠিন পদার্থ দ্রবীভূত হয় তাই দ্রাব্য। যে তরল দ্রবীভূত করে তা দ্রাবক। দ্রবীভূত কঠিন পদার্থ ও তরল দ্রাবকের মিশ্রণে তৈরি হয় দ্রবণ। অর্থাৎ দ্রাবক+দ্রব = দ্রবণ।

দ্রাব্যতা: কোনো নির্দিষ্ট উষ্ণতায় গ্রামে প্রকাশিত যে পরিমাণ দ্রব একশ গ্রাম দ্রাবকে দ্রবীভূত হয়ে সম্পৃক্ত দ্রবণ উৎপন্ন করে তাকে ঐ উষ্ণতায় ঐ দ্রবের দ্রাব্যতা বলে। দ্রাব্যতা সাধারণত চারটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে- ১. দ্রাবকের প্রকৃতি, ২. দ্রবের প্রকৃতি, ৩. উষ্ণতার প্রভাব ও ৪. চাপের প্রভাব।

দ্রবণের বিভিন্ন নামকরণ: একটি দ্রবণে দ্রাব্য কণাগুলো দ্রাবকের "আন্তঃআণবিক ফাঁক” এর মধ্যে অবস্থান করে। এই “আন্ত:আণবিক ফাঁক” ও দ্রাব্য কণা পারস্পরিক আকারের উপর নির্ভর করে দ্রবণ কে বিভিন্ন নামে বুঝানো হয় ।

কলয়ডীয় দ্রবণ : যে দ্রবণে দ্রাব্য কণাগুলির ব্যাস ১০ সেমি থেকে ১০ সেমি. এর মধ্যে, যাকে খালি চোখে সমসত্ব মনে হলেও অতি শক্তিশালী অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখলে অসমসত্ব দেখায় এবং যে দ্রবণে দ্রাব্য কণাগুলি সমগ্র দ্রাবক ব্যাপী প্রলম্বিত অবস্থায় থাকে, সেই দ্রবণকে কলয়ডীয় দ্রবণ বলে। এ ক্ষেত্রে দ্রাব্যকণা দ্রাবকের আন্তঃআণবিক ফাঁকের চেয়ে বড় বিধায় এর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে না। আবার যথেষ্ট ভারী বা হালকা না হওয়ায় যেমন পাত্রের নীচে জমে না তেমনি দ্রাবকের উপরে ভেসে উঠে না ।

অধিকাংশ কলয়েডধর্মী পদার্থই পানিগ্রাহী। উদ্ভিদ দেহে বিভিন্নধর্মী কলয়েড পদার্থ রয়েছে। পদার্থের এই গুণের কারনেই তা পানি শোষণ করতে পারে। কলয়েডধর্মী বিভিন্ন পদার্থ যে প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের তরল পদার্থ শোষণ করে তাকে ইমবাইবেশন বলে। বহিঃ অভিশ্রবণের কারণে লবণের দ্রবণে আঙ্গুর রাখলে আর পানি শোষণ করে তা ফেটে গিয়ে চুপসে যায়।

সাসপেনসন: এ দ্রাব্য কণাগুলোর ব্যাস ১০ সেমি. হতে বড় বিধায় আন্তঃআণবিক ফাঁকে প্রবেশ করার প্রশ্ন উঠেনা। উপরন্তু এদের ওজন দ্রাবকের প্লবতা (অপসারিত দ্রাবকের ওজন) অপেক্ষা বেশী বা কম। বেশী হলে দ্রবণের নীচে জমে যায় অথবা কম হলে দ্রাবকের উপর ভেসে উঠে।

ইমালসন: কলয়েড কণা (দ্রাব্য) এবং মাধ্যম (দ্রাবক) উভয়ই তরল হলে তাকে ইমালসন বা অপদ্রব বলা হয়। যেমন- দুধ একটি ইমালসন। তেল এবং পানির কলয়ডীয় দ্রবণ একটি ইমালসন।

সল ও জেল:
সল: পানির মধ্যে কঠিন পদার্থের কলডীয় দ্রবণ কে সল বলে।
জেল: অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ উষ্ণতায় উৎপন্ন সলকে শীতল করলে এটি থকথকে কঠিন আকার ধারণ করে । এই থকথকে কলয়ডীয় দ্রবণই জেল। অধিক উষ্ণতায় ভাতের ফেন ষ্টার্চে সল। একে শীতল করলে এটি যে থকথকে কঠিন আকার ধারণ করে তাই জেল ।

বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর

১. লবণের দ্রবণে আঙ্গুর রাখলে তা চুপসে যায় কোন প্রক্রিয়ায়? [দুর্নীতি দমন কমিশনের অধীনে উপ-সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০]

উত্তর: (গ) বহিঃ অভিস্রবণ

নবীনতর পূর্বতন