ড. নীলিমা ইব্রাহিম

ড. নীলিমা ইব্রাহিম (১৯২১-২০০২)

বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী ড. নীলিমা ইব্রাহিম আমৃত্যু মানুষের শুভ ও কল্যাণী চেতনায় আস্থাশীল ছিলেন। মুক্তবুদ্ধি, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও উদার মানবিকতাবোধ ছিল তাঁর জীবনদর্শন। ১৯৪৫ সালে নিজের পছন্দে ইন্ডিয়ান আর্মি মেডিকেল কোৱেৱ ক্যাপ্টেন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে (বারডেম হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা) বিয়ে করেন। বিয়ের পর নীলিমা রায় চৌধুরী থেকে নীলিমা ইব্রাহিম নামে পরিচিত হন।

ড. নীলিমা ইব্রাহিমের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম ড. নীলিমা ইব্রাহিম ১১ অক্টোবর, ১৯২১ সালে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার মুলঘর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ।
তাঁর মেয়ে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ডলি আনোয়ার তাঁর মেয়ে।
বিশেষ পরিচিতি তিনি বাংলা একাডেমির প্রথম নারী মহাপরিচালক ছিলেন।
নাট্যসংস্থা ১৯৬২-৬৩ সালে ‘ রঙ্গম ' নামে একটি নাট্যসংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), বেগম রোকেয়া পদক (১৯৯৬), একুশে পদক (২০০০), স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১১) লাভ করেন।
গ্রন্থসমূহ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:

প্রবন্ধ:

‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি' (ফেব্রুয়ারি বইমেলা-১৯৯৪ এবং অখন্ড প্রকাশ-১৯৯৮। সূত্র: গ্রহটির ভূমিকা অংশে লেখিকার আত্নকথন): এটি মুক্তিযুদ্ধের সত্য কাহিনিনির্ভর জীবন ইতিহাস।
'শরৎ প্রতিভা' (১৯৬০),
'বাংলার কবি মধুসূদন' (১৯৬১),
বাঙালি মানস ও বাংলা সাহিত্য' (১৯৮৭),
‘অগ্নিস্নাত বঙ্গবন্ধুর ভস্মাচ্ছাদিত কন্যা আমি' (১৯১৫)।

উপন্যাস :

‘বিশ শতকের মেয়ে' (১৯৫৮),
‘এক পথ দুই বাঁক' (১৯৫৮),
‘কেয়াবন সঞ্চারিণী’ (১৯৬২),
‘বহ্নিবলয়' (১৯৮৫)।

নাটক :

‘দুয়ে দুয়ে চার' (১৯৬৪),
‘যে অরণ্যে আলো নেই' (১৯৭৪),
‘সূর্যাস্তের পর’ (১৯৭৪),
‘রোদ জ্বলা বিকেল' (১৯৭৪)।

গল্প :

‘রমনা পার্কে' (১৯৬৪)।

আত্মজীবনী:

‘বিন্দু বিসর্গ' (১৯৯১)।

ভ্রমণকাহিনি :

‘শাহী এলাকার পথে পথে' (১৯৬৩),
‘বস্টনের পথে' (১৯৬৯)।
মৃত্যু তিনি ১৮ জুন, ২০০২ সালে মারা যান।

‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি' গ্রন্থের পরিচয়

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলার যেসব নারী কোনো না কোনোভাবে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে দিনের পর দিন পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সেইসব যুদ্ধাহত নারীদের সত্য কাহিনি নিয়ে নীলিমা ইব্রাহীম রচনা করেন ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি' (১৯৯৪)। এতে আলোচিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, হানাদার বাহিনী ও রাজাকারদের অপকীর্তি। এ গ্রন্থে তারা, মেহেরজান, রিনাদের জীবন কাহিনির মাধ্যমে দু'লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

নবীনতর পূর্বতন