আহসান হাবীব

আহসান হাবীব (১৯১৭-১৯৮৫)

পঞ্চাশের দশকের অন্যতম আধুনিক কবি আহসান হাবীব। তাঁর কবিতার বিষয়বস্তু ছিল বস্তুনিষ্ঠতা ও বাস্তব জীবনবোধ। তাঁর কবিতায় গ্রামীণ ঐতিহ্যমণ্ডিত সামাজিক বাস্তবতা, মধ্যবিত্ত মানুষের সংগ্রামী চেতনা ও সমকালীন যুগ-যন্ত্রণা শিল্পসম্মতভাবে পরিস্ফুট হয়েছে। ২২ জুন, ১৯৬৭ সালে সরকার বেতার ও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে সরকারের সে সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার পক্ষে বিবৃতি দেন। ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৩ সালে এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অনুষ্ঠিত এক বুদ্ধিজীবী সমাবেশে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ।

আহসান হাবীবের সাহিত্যকর্ম

সাহিত্যিক উপাদান সাহিত্যিক তথ্য
জন্ম আহসান হাবীব ২ জানুয়ারি, ১৯১৭ সালে পিরোজপুরের শঙ্করপাশা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কথাসাহিত্যিক মঈনুল আহসান তাঁর সন্তান ।
সম্পাদনা তিনি ১৯৬৪ সালে দৈনিক পাকিস্তান (পরবর্তীতে দৈনিক বাংলা) পত্রিকার সাহিত্যপাতার সম্পাদক হিসেবে ২১ বছর দায়িত্ব পালন করেন। সহকারী সম্পাদক: ‘দৈনিক তকবীর' (১৯৩৭), ‘মাসিক বুলবুল' (১৯৩৭-৩৮), ‘মাসিক সওগাত' (১৯৩৯-৪৩: ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক)। দৈনিক আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী, দৈনিক কৃষক, দৈনিক ইত্তেহাদ, সাপ্তাহিক প্রবাহ প্রভৃতি পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন।
প্রথম প্রবন্ধ সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ১৯৩৩ সালে স্কুল ম্যাগাজিনে তার প্রথম প্রবন্ধ 'ধর্ম' প্রকাশিত হয়।
প্রথম কবিতা ১৯৩৪ সালে তাঁর প্রথম কবিতা 'মায়ের কবর পাড়ে কিশোর' পিরোজপুর সরকারি স্কুল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়।
পুরস্কার ও সম্মাননা তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬১), একুশে পদক (১৯৭৮) পান।
প্রথম কাব্য তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যের নাম:

‘রাত্রিশেষ' (১৯৪৭): এতে গ্রাম ও নগর উভয়কেন্দ্রিক কবিতা বিদ্যমান। তাঁর কবিতায় ব্যঙ্গের মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠতা ও বাস্তব জীবনবোধ ফুটে উঠেছে।
কাব্যগ্রন্থ আহসান হাবীবের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থসমূহের নাম:

ছায়াহরিণ' (১৯৬২): এ কাব্যে ঐতিহ্য আশ্রয়ী কবি বণিক সভ্যতার রুদ্র রূপ দেখিয়েছেন। তিনি গ্রামীণ অনুষঙ্গে স্থিত হতে চেয়েছেন ।

‘সারা দুপুর' (১৯৬৪): এটি আহসান হাবীবের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ।

‘আশায় বসতি' (১৯৭৪),
'মেঘ বলে চৈত্রে যাবো' (১৯৭৬),
‘দুই হাতে দুই আদিম পাথর' (১৯৮০),
‘প্রেমের কবিতা' (১৯৮১),
‘বিদীর্ণ দর্পণে মুখ' (১৯৮৫)।
উপন্যাস তাঁর উপন্যাস সমূহের নাম :

‘আরণ্য নীলিমা' (১৯৬২): উদীয়মান মুসলমান মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজের প্রতিনিধি এক তরুণ চিত্রশিল্পী ও তার স্ত্রীর মনোজাগতিক সংকট এ উপন্যাসের উপজীব্য।

‘রানী খালের সাঁকো’ (১৯৬৫),
‘জাফরানী রং পায়রা'
শিশুতোষ তাঁর শিশুতোষগ্রন্থ সমূহের নাম :

‘ছোটদের পাকিস্তান' (১৯৫৪),
‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর' (১৯৭৭),
‘ছুটির দিন দুপুরে' (১৯৭৮)।
মৃত্যু তিনি ১০ জুলাই, ১৯৮৫ সালে মারা যান।
নবীনতর পূর্বতন